• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

করোনা রুখতে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের দাবি মমতার

করোনা ঠেকাতে বিভিন্ন মেডিকেল উপকরণ, করোনা কিট ইত্যাদির জন্য ১০৫ কোটি চাওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। এই রাজ্যে মাত্র দু'টি করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: IANS)

করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্র এবং রাজ্যের একজোট হওয়ার আবহটা ক’দিন ধরেই চোখে পড়ছিল। আন্তর্জাতিক উড়ান বন্ধ করা, আন্তরাজ্য বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্জিতে সায় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আবার প্রধানমন্ত্রীর আর্জিমতো লকডাউনের নির্দেশিকাও জারি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও।

যদিও বুধবার সংবাদিক সম্মেলন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন আগামী ৩১ মার্চের পর পরিস্থিতি বিচার করে রাজ্যে লকডাউনে কোনও শিথিলতা জারি করা হবে কিনা সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কেন্দ্রের চালু করা ন্যাশনাল ডেজাস্টার আইনও রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই লাগু করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মমতা। সেইসঙ্গে কেন্দ্রের কাছে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের দাবি পরোক্ষভাবে মমতার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার দীর্ঘদিনের অভিযোগের সুরকেই চড়া পর্দায় বেঁধে দিল।

যদিও এই বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধুমাত্র নিজের রাজ্যের জন্যই নয়, দেশের সব রাজ্যের জন্যই দাবি করেছেন। তবে ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য এবং অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ বলে এই রাজ্যের বাড়তি প্যাকেজ পাওয়া উচিত বলে মনে করছেন মমতা।

মঙ্গবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা মজবুত করতে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছে। মমতা বলেন, এই বরাদ্দ বন্টনে স্বচ্ছতা ও বিবেচনা থাকা দরকার। এরপরেও বিভিন্ন রাজ্যের নানা খাতে অর্থের প্রয়োজন হবে করোনা মোকাবিলায়।
মমতা বলেন, তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ, স্বাস্থ্য দফতর এমনকী অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের জন্য মাস্ক, গ্লাভস ইত্যাদি সরবরাহ করা দরকার কেন্দ্রীয় সরকারের। রাজ্য সরকারের আর্থিক ভাড়ারে টানাটানি থাকলেও অনেকটাই দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া করোনা ঠেকাতে বিভিন্ন মেডিকেল উপকরণ, করোনা কিট ইত্যাদির জন্য ১০৫ কোটি চাওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। এই রাজ্যে মাত্র দু’টি করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। আরও তিনটির কথা বললেও এখনও পর্যন্ত একটি পাওয়া গিয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেরও করোনা পরীক্ষার পরিকাঠামো তৈরি রয়েছে। এই বিষয়ে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রেসিডিওর (এসওপি) চেয়ে পাঠালেও এখনও তেমন সাড়া মেলেনি কেন্দ্রের তরফে।

কেন্দ্রীয় বঞ্চনার পুরনো সুপ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারে ঋণশোধ করাও রাজ্যের কাছে মস্ত চাপ। মোরাটোরিয়ামের জন্য বারবার আবেদন করেও কোনও ফল মেলেনি। অন্যদিকে রাজ্যে বর্তমানে ব্যবসা বাণিজ্য তেমন না হওয়ায় অর্থনীতি প্রায় ভেঙে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণ রাজ্যকে একটা ভয়াবহ অবস্থার মুখে ফেলে দিয়েছে।

করোনা সংক্রমণে কেন্দ্র অনেক দেরিতে পদক্ষেপ নিয়েছে এমন অভিযোগ করতেও শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। অথচ এই রাজ্যের করোনা সংক্রমণ ঠেকানো গোটা দেশের জন্যই খুব জরুরি। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, এই রাজ্য গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং একাধিক প্রতিবেশি দেশের সীমান্তে রয়েছে। তাই করোনা ঠেকাতে প্যাকেজের অঙ্ক পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বেশি হওয়া উচিত।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই একটি দুশো কোটি টাকার করোনা ত্রাণ তহবিল গঠন করেছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন স্টেট এমার্জেন্সি রিলিফ ফান্ডে মুক্তহস্তে দান করার জন্য আবেদন করেছেন সাধারণ মানুষ থেকে কপোরেট সংস্থার কাছে। এই ফান্ডে যদি চিকিৎসার উপকরণ দিতে চান তাহলে সচিব সঞ্জয় বনশলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে ৯০৫১০২২০০০ নম্বরে। আর আর্থিক সাহায্য দানের জন্য সেভিংস অ্যাকাউন্ট নম্বর হল ৬২৮০০৫৫০১৩৩৯। আইএফএসসি কোড- আইসিআইসি ০০০৬২৮০। এছাড়া wb.gov.in ওয়েবসাইটেও যোগাযোগ করা যাবে।