নন্দীগ্রামে দ্বৈরথ ‘মাননীয়া’ মমতা বনাম ‘ভুমিপুত্র’ শুভেন্দুর। সােমবারই শুভেন্দু অধিকারী নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযােগ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে দুটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। যার মধ্যে একটি সিবিআই-এর মামলা। কিন্তু নির্বাচন কমিশনে পেশ করা হলফনামায় সেই মামলার উল্লেখ করেননি নন্দীগ্রামের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই যুক্তি দিয়ে মমতার মনােনয়নপত্র বাতিল করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু সােমবার মনােনয়ন পত্র ত্রুটিনির দিন দেখা দিল শুভেন্দু অধিকারীর অভিযােগের গােড়াতেই গলদ। শুভেন্দুর নিশানায় থাকা ‘মমতা’ আসলে নন্দীগ্রামের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন।
তারই নেমশেক, একজন সরকারি কর্মচারীর স্ত্রী। যাঁর বিরুদ্ধে বে-আইনি সম্পত্তিসহ একাধিক দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযােগ রয়েছে। তাই নির্বাচন কমিশন সােমবার জানিয়ে দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনােনয়নপত্র বৈধ, তা বাতিলের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
এদিকে ভুল তথ্য দিয়ে এই ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযােগ দায়ের করায় শুভেন্দুকে কটাক্ষ করল তৃণমূলের একাধিক নেতারা। সসামবার বিকেল ৫ টায় মনােনয়নপত্র পরীক্ষার চুড়ান্ত সময়সীমা উত্তীর্ণ হওয়ার পরেই কমিশনের ওয়েবসাইটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর মনােনয়ন গৃহীত হয়েছে বলে ঘােষণা করা হয়।
মমতার বিরুদ্ধে হলনামায় ফৌজদারি মামলা সংক্রান্ত তথ্য গােপনের অভিযােগ তুলে তাঁর মনােনয়ন বাতিলের দাবিতে সােমবার নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নন্দীগ্রামে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী এজেন্ট মেঘনাদ পাল এবং বিজেপি আইনজীবী সেলের সদস্যেরা।
কিন্তু, কমিশনের পদক্ষেপে স্পষ্ট, সেই অভিযােগ আমল দেওয়া হয়নি। মমতার প্রার্থীপদ খারিজ করার দাবিতে সােমবার বিকেলে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপি-র আইনজীবী সেলের প্রতিনিধিরা।
শুভেন্দুর প্রতিনিধি মেঘনাদ তার আগেই নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের রিটার্নি। অফিসারের কাছে অভিযােগ দায়ের করেন বলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিজেপি সূত্রের খবর। বিজেপি-র দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা তাঁর মনােনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায় নিজের সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়েছেন। যা নির্বাচনী বিধিভঙ্গের সামিল।
মনােনয়নে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা নেই। কিন্তু বিজেপি আইনজীবী সেলের দাবি, মমতার বিরুদ্ধে ৬ টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তা মনােনয়নপত্রে উল্লেখ না করে তিনি আইনবিরুদ্ধ কাজ করেছেন।
এবিষয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘােষ বলেন, “ওরা তাে নির্বাচন কমিশনে অভিযােগ দায়ের করেছেন। কমিশনের তরফে নিশ্চয়ই সংশ্লিষ্ট তৃণমূল প্রার্থীকে নােটিস দেওয়া হবে। তার জবাব যাবে।
তা ছাড়া, কে কোথায় মামলা করে রেখেছে, সেটা সম্পর্কে তথ্য না থাকলে প্রার্থীর বিরুদ্ধে তা হলনামায় দেওয়া সম্ভব নয়।” কুণালের দাবি, ভােটে জামানত হারাবেন বুঝে শুভেন্দু এমন করছেন।