• facebook
  • twitter
Sunday, 24 November, 2024

বিরোধীদের উত্যক্ত করা থেকে বিরত হতে বললেন মমতা

করোনা পরিস্থিতিতে বিরোধীদের লাগাতার উত্যক্ত করার ঘটনা যে তাঁর মাথা যন্ত্রণার কারণ হয়ে উঠেছে বুধবার প্রকাশ্যে এমন কথা বলতে শোনা গেল মমতাকে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: IANS)

এর আগে মুখ্যমন্ত্রীকে কখনও নিজের শরীর নিয়ে চিন্তিত হতে শোনা যায়নি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে বিরোধীদের লাগাতার উত্যক্ত করার ঘটনা যে তাঁর মাথা যন্ত্রণার কারণ হয়ে উঠেছে বুধবার প্রকাশ্যে এমন কথা বলতে শোনা গেল মমতাকে। অথচ করোনা প্রতিরোধ করতে বিরোধীদের কোনও মাথাব্যথাই নেই।

কখনও করোনায় মৃতের সংখ্যা গোপন। কখনও অডিট কমিটির যৌক্তিকতা। কখনও লকডাউন পালনে গাফিলতি। কিংবা আন্তঃমন্ত্রক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সহযোগিতা। অথবা টিকিয়াপাড়ায় পুলিশের ওপর হামলা। একাধিক ইস্যু নিয়ে বিরোধী বিশেষ করে বিজেপি একের পর এক আক্রমণ করে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে।

বুধবার সহ্যের বাঁধ ভাঙল মুখ্যমন্ত্রীর। পাল্টা জবাব দিয়ে এদিন তিনি বলেন, আমিও মানুষ। আমারও কাল থেকে মাথা যন্ত্রণা করছে। রোজ রোজ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজকর্ম সেরে রাতে বাড়ি ফিরে বিরোধীদের এই উত্যক্ত করা আর ভালো লাগছে না।

বুধবার নবান্ন সভাঘরে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী রণংদেহী হয়ে ওঠেন বিজেপির বিরুদ্ধে। কটাক্ষ করে বলেন, লেবু কচলাতে কচলাতে তেতো হয়ে যাচ্ছে। লেবু কচলাবেন না। তার চেয়ে অরেঞ্জ জুস খান। ভিটামিন সি আছে। এই করোনা পরিস্থিতিতেও আমাদের রাজ্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প খাতে ৫৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। ক’টা রাজ্য তা করতে পেরেছে?

আগামী ছ’মাসের জন্য প্যাকেজ হিসেবে অর্থনৈতিক টাস্ক ফোর্স ১ লক্ষ ৫২ হাজার কোটি টাকার একটা ব্যবস্থা রেখেছে। এরপরেও সরকারি কর্মচারীদের বেতন, অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন দিতে হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির দিকে আঙুল তুলে বলেন, কাজ তো কিছুই করেন না। কিছু হলেই খুঁত ধরেন। গুজরাত, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশে কতকিছু ঘটছে। আমরা তো কোনও রাজ্যের বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। বরং আমরা সব রাজ্যের পাশে রয়েছি। কিন্তু কিছু মানুষের খালি রাজ্য সরকারের বদনাম করছে। আর কোথাও কিছু হলে সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে সমালোচনা করছে ঘরে বসে বসে।

মমতা এদিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, রাস্তায় নেমে কাজ করুন। এখনই তো সাচ্চা (স্বচ্ছ) ভারতে রাস্তাঘাট, হাসপাতাল পরিষ্কার করার সময়। মমতা এদিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রুটিন কেস নিয়ে রাজনীতি করা বন্ধ করুন। কাজ করলে কিছু মানুষের ভুল হতেই পারে। ওদের ক্ষমা করে দিতে হয়।

এম আর বাঙুরে হাসপাতালের একটি রিপোর্ট নিয়ে বিজেপির তোপ দাগা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, একশটার মধ্যে একটা ভুল হতেই পারে। কিন্তু তা নিয়ে রাজনীতি করার সময় এটা নয়। বরং যাঁরা ভালো কাজ করছেন, তাদের প্রশংসা করুন। এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে থেকে সাহায্য করুন।

মমতা এদিন বলেন, করোনা মৃত্যুর পর্যবেক্ষণে তৈরি অডিট কমিটির প্রসঙ্গ তুলে বলেন, অডিট কমিটি আমি তৈরি করিনি। মমতা প্রশ্ন তোলেন, এখন তো সামনে কোনও নির্বাচন নেই। তাহলে কীসের রাজনীতি? আমি তো এখন রাজনীতি করছি না। মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না। মনে রাখবেন কিছু মানুষকে কিছুদিনের জন্য ভুল বোঝানো যায়। কিন্তু সব মানুষকে সবদিনের জন্য ভুল বোঝানো যায় না।

তবে নানান ইস্যুতে বিজেপিকে আক্রমণের পরেও বিজেপি নেতাদের উদ্দেশে তাঁর আশ্বাস সমস্যায় পড়লেও এসএমএস করে জানান। কারও চিকিৎসার প্রয়োজন হলে কিংবা খাওয়ার অভাব ঘটলে আমাকে জানান। আমি যথাসাধ্য সাহায্য করব। তবে এদিন শেষমেশ মমতা বুঝিয়ে দিলেন, বিরোধীরা মাথায় গোঁতা মারলেও তিনি প্রেম বিলোতে পিছপা হবেন না।