কলকাতা, ২৫ জানুয়ারি: নানা আপত্তির মধ্যেও মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়সূচী নিয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সিদ্ধান্তকেই সিলমোহর দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে, পর্ষদের নির্ধারিত সময়েই শুরু হবে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষা। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বলেন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সকাল ৯ টা ৪৫ মিনিটেই মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে। যেহেতু মাধ্যমিক পরীক্ষার আর বেশি দেরি নেই, সেজন্য আর ঝুঁকি নিতে রাজি নয় আদালত। তাতে প্রশাসনিক কাজে বিভিন্নরকম সমস্যা হতে পারে। তবে পর্ষদকেও মানতে হবে আদালতের কয়েকটি বিশেষ নির্দেশ। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে আদালতকে জানাতে হবে সেই নির্দেশগুলো মেনে চলার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে কিনা।
জেনে ননিই আদালতের নির্দেশে সেই পদক্ষেপগুলি কী কী? আদালত জানিয়েছে, ১) প্রতিটি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী যাতে পরীক্ষা কেন্দ্রে সঠিক সময়ে পৌঁছতে পারেন, সে বিষয়ে রাজ্যকে যানবাহন ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে। ২) প্রতিটি থানা এলাকায় মাইকিং করতে হবে। যাতে পরীক্ষার্থীরা যাতায়াতে কোনওরকম অসুবিধায় পড়লে পুলিশ বা প্রশাসন তাদের সঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে পারেন। ৩) পর্ষদকে একাধিক হেল্পলাইন নম্বর চালু করতে হবে। ৪) পরীক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়লে স্থানীয়ভাবে কোথায় যোগাযোগ করবেন, পর্ষদকে তার যাবতীয় তথ্য দিয়ে বিজ্ঞপ্তি ও বিজ্ঞাপন প্রকাশ করতে হবে। ৫) পর্যাপ্ত পরিবহণ ব্যবস্থা সচল রাখতে হবে। যাতে সময়মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে পরীক্ষার্থীদের কোনওরকম সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয়। ৬) পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে কোনও পরীক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে অথবা পরীক্ষা কেন্দ্রে অসুস্থ হলে তার আপৎকালীন চিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা রাখতে হবে। এই ব্যবস্থাগুলি সঠিকভাবে নেওয়া হয়েছে কিনা তা আদালতকে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় এগিয়ে আনা নিয়ে একটি মামলা হয়। সেই মামলার শুনানিতে আজ এমনই মত দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থীর কথা মাথায় রেখে রাজ্যকে কয়েকটি নির্দেশে দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। সেই পদক্ষেপগুলি নিশ্চিত করে আদালতকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও রাজ্য সরকারকে।
তবে এই পদক্ষেপগুলির অনেকগুলির প্রস্তুতি যে অনেক আগেই নেওয়া হয়েছে, সেবিষয়ে আদালতকে অবগত করেছেন পর্ষদের আইনজীবী। তিনি আদালতকে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তিনটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। পরিবহণ ব্যবস্থাও উপযুক্তভাবে রাখা হয়েছে। এছাড়া আগে থেকেই বেশ কিছু হেল্পলাইন নম্বর চালু রয়েছে। যাতে আপৎকালীন কোনওরকম সহযোগিতার প্রয়োজন হলে পরীক্ষার্থীরা দ্রুত যোগাযোগ করতে পারেন।