রবিবার এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডের সিঁড়ি দিয়ে নেমে এলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। পরনে ছিল লাল ধুতি, লাল পাঞ্জাবি, মুখে লাল মাস্ক, কপালে লাল তিলক। রবিবার বেলা সােয়া ১২ টার সময় মদন মিত্রকে ছাড়া হয় হাসপাতাল থেকে। বাইরে তখন অপেক্ষারত অতি উৎসাহী মদন অনুগামীদের ভিড়।
কিন্তু আদালতের নির্দেশে মুখ খােলা বারণ মদনের। তাই স্বমেজাজে হাসপাতালের সিঁড়িতে দাঁড়িয়েই ফেসবুক লাইভ করেন। মিনিট দশেকের ফেসবুক লাইভে কিছু বলবেন না বলেও, কার্যত বক্তৃতার ফোয়ারা ছােটালেন মদন। মাঝে মাঝে গাইলেন গান।
মুক্তির আনন্দে মদন গাইলেন, ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ,কখনও রবীন্দ্রসঙ্গীত‘ আমার প্রাণের মাঝে সুধা আছে। আবার নারদ মামলা প্রসঙ্গ নিয়ে বলতে গিয়ে মদন বললেন, “নারদ নারদ।” ফেসবুক লাইভে প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “মন্ত্রীও নই, ষড়যন্ত্রীও নই। আমি আপনাদের মতাে সাধারণ মানুষ।”
তবে মামলা প্রসঙ্গে কিছু না বলতে চাইলেও তীক্ষণ কটাক্ষ ছিল মদনের মন্তব্যে। হিন্দি ছবি ‘শােলে’ ছবির সংলাপ দিয়ে তিনি বলেন, “ইয়ে হাত মুঝে দে দে ঠাকুর। আমি মরে গেলে সবাই বলবে, ইয়ে ইমানদার থা, বেইমান নেহি। আবার তাঁর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়া নিয়ে যাতে অযথা কোনও বিতর্ক না হয়, তাই বেশ কয়েক বার জানান দিলেন, মেডিকেল বাের্ডের নির্দেশেই ছাড়া পেয়েছেন তিনি।
এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে মুক্ত হয়ে গাড়ি চালিয়ে রওনা দেন ভবানীপুরে কাঁসারি পাড়ার বাড়িতে। নাতি ৫ বছর বয়সের মহারূপের সঙ্গে কিছুক্ষণ কাটিয়েই, দক্ষিণ কলকাতার ৫০০ বছরের পুরনাে এক মাজারে যান। সেখানে গিয়ে চাদর চড়িয়ে প্রার্থনায় অংশ নেন তিনি। এর পর অসুস্থ হয়ে পড়েন মদন। হাসপাতালের কাছে গুরদ্বারে যাওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু তার আগেই শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। তাঁর সঙ্গে অনেক অনুগামী ছিলেন। তাঁরাই রাস্তায় প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করেন। ইনহেলার দেওয়া হয়। রাস্তাতেই অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এর পরে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অসুস্থ অবস্থাতেই সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন মদন।
তিনি তার বিধানসভা আসন কামারহাটির মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেন, “আমি আপনাদের কাছে যেতে পারছি না। অসুস্থ হওয়ায় আপনারাই আমার কাছে বারবার আসেন। তবে আমি কোন ছল করে অসুস্থ হইনি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুস্থ হয়ে আমি কামারহাটি যাব।”