আকাশপথে দুই চব্বিশ পরগণার একাধিক অঞ্চল পরিদর্শন এবং বসিরহাটে প্রশাসনিক বৈঠকের পর শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী জানান, আম্ফান বিপর্যয়ে রাজ্যের প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এদিন প্রধানমন্ত্রীর হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এটা সম্পূর্ণ প্যাকেজ নাকি অগ্রিম, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এটা অগ্রিমও হতে পারে। কারণ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এ বিষয়ে তিনি পরে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে এই সঙ্কটের সময় কেন্দ্রের সঙ্গে যে হাত মিলিয়ে কাজ করা প্রয়োজন সেকথা স্বীকার করে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
জেলা সফরের পর মুখ্যমন্ত্রী জনান, হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছে। রাজ্যে ৮০ টির মতো মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। এরমধ্যে ১৯ জন শুধুমাত্র কলকাতার বাসিন্দা। যেসব জায়গা এদিন পরিদর্শন করা হয়েছে, সেগুলি প্রায় ধুলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে।
আম্ফানের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে আজ শনিবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা ফের পরিদর্শনে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। ঈদের পর আরও কয়েকটি জেলায় যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। বসিরহাটে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী ওড়িশা রওনা হওয়ার পর কলকাতা বিমানবন্দরে আস্ফান প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এটা জাতীয় বিপর্যয়ের থেকেও বড় বিপর্যয়। এরকম বিপর্যয় আমার জীবনে আগে কখনও দেখিনি। বাংলার ষাট শতাংশ মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রামগুলো ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। মারাত্মক বিপর্যয় এটা। আমাদের মন্ত্রী ও আধিকারিকরা দিনরাত কাজ করেছেন। পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করেছে। লকডাউন, করোনা এবং আম্ফান। আমরা একসঙ্গে তিন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছি।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে রাজ্যের পুরো পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। দুই চব্বিশ পরগণা, দুই মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি– এই সাতটি জেলা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সারা রাজ্যে পুরো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত তা হিসেব নিকেশ করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, এক লক্ষ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্যাকেজের বিষয়টি পুরো স্পষ্ট নয়। এদিন প্রধানমন্ত্রীর সফরে বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যের তরফে বকেয়া পাওনা ৫৩ হাজার কোটি টাকার প্রসঙ্গও তোলা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, কেন্দ্র টাকা দিলে আমরা রাজ্যের হাল ফেরাতে কাজ করতে পারব। তবে পুরোপুরি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এখনও খানিকটা সময় লাগবে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।