প্রয়াত হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী হাফিজ আলম সৈরানি। তাঁর ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়েছিল। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেই সোমবার তাঁর মৃত্যু হয় । বয়স হয়েছিল ৬৪। পরিবার সূত্রের খবর, সপ্তাহ দুয়েক আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন হাফিজ আলম সৈরানি। তখন তাঁকে বাইপাসের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে। রবিবার এই প্রবীণ নেতাকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
দীর্ঘ সময় ফরওয়ার্ড ব্লকে ছিলেন উত্তর দিনাজপুরের প্রভাবশালী এই নেতা। ১৯৯৬ সালে ভোটে জিতে রাজ্যের মন্ত্রী হন। তাঁর দাদা রমজান আলি ছিলেন উত্তর দিনাজপুর জেলার গোয়ালপোখর কেন্দ্রের বিধায়ক। কলকাতার এমএলএ হস্টেলে তাঁর মৃত্যু হয়। এরপরই গোয়ালপোখর আসনে লড়াই করে বিধায়ক হন হাফিজ আলী সৈরানি। ১৯৯৬ সালের বিধানসভা ভোটে জিতে মন্ত্রী হন । ২০০৬ পর্যন্ত ত্রাণ এবং সমবায় দফতর ছিল তাঁর হাতে। ২০০৬ সালে গোয়ালপোখরে কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সীর কাছে তিনি হেরে যান।
পরবর্তী সময়ে নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে দলের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ শুরু হয়ে যায়। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি দলের সদস্যপদ ও নেতৃত্ব থেকে ইস্তফা দেন। হাফিজের ভাইপো আলি ইমরান রামজ, যিনি ভিক্টর নামে পরিচিত ওই আসনে ফরওয়ার্ড ব্লকের টিকিটে দাঁড়িয়ে জয়ী হয়েছিলেন। এরপর তিনিও দলের কর্মপদ্ধতি নিয়ে সোচ্চার হন। ২০২২ সালে হাফিজ এবং ইমরান দু’জনেই ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে কংগ্রেস যোগ দেন। ২০২৩ সালে তাঁকে প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি পদে নিযুক্ত করা হয়। ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রথম সারির নেতা সৈরানি প্রয়াত অশোক ঘোষের আমল থেকেই বামফ্রন্টের বৈঠক ও কর্মসূচিতে নিয়মিত যোগ দিতেন তিনি। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুরও বিশেষ স্নেহভাজন ছিলেন সৈরানি।
হাফিজের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। তিনি লিখেছেন, ‘সংসদীয় রাজনীতির আঙিনায় এবং প্রগতিশীল কর্মধারার ক্ষেত্রে প্রয়াত হাফিজ আলি সৈরানির ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ দলের প্রবীণ এবং অভিজ্ঞ এই নেতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া বঙ্গের হাত শিবিরে।