ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ত্রুটি, চিকিৎসক অপূর্ব বিশ্বাসকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ সিবিআই–এর

ফের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিলেন চিকিৎসক অপূর্ব বিশ্বাস। বুধবার অপূর্ব ও আরজি করের মর্গের এক কর্মীকে তলব করেছিল সিবিআই আধিকারিকরা। তলব পেয়ে এদিন সকালে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেন ওই দুইজন। উল্লেখ্য, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক–পড়ুয়ার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চিকিৎসকদের যে দল গঠন করা হয়েছিল সেই দলে অপূর্ব বিশ্বাস ছিলেন।

উল্লেখ্য, ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে এক তরুণী চিকিৎসক–পড়ুয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। সেদিনই সূর্যাস্ত্রের পর তরুণীর মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। ৯ আগস্ট আরজি করে মোট ৮টি দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছিল। তবে শুধুমাত্র নির্যাতিতার দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছিল সূর্যাস্তের পর। এই সব অভিযোগ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই অপূর্ব ও এক মর্গ কর্মীকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল।

এই নিয়ে ৩ বার চিকিৎসক অপূর্বকে তলব করল সিবিআই। তাঁকে প্রথমবার তলব করা হয়েছিল ২২ সেপ্টেম্বর। এরপর মঙ্গলবারও তাঁকে এবিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারী অফিসাররা। বুধবার তাঁকে ফের তলব করা হল। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এমএসভিপি সঞ্জয় বশিষ্ঠকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই।


২২ সেপ্টেম্বর সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে অপূর্ব বিশ্বাস দাবি করেছিলেন, নির্যাতিতার দ্রুত ময়নাতদন্ত করার জন্য তাঁর উপর চাপ তৈরি করা হয়েছিল। মৃতার কাকা পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি তাঁকে ফোন করে চাপ দিয়েছিলেন বলে জানান তিনি। সেই ‘কাকা’ তাঁকে বলেছিলেন, ‘তাড়াতাড়ি ময়নাতদন্ত না হলে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেব।’ পরে সেই ‘কাকা’র পরিচয় প্রকাশ্যে আসে। তাঁর নাম সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়। তাঁকে নির্যাতিতা তরুণী কাকু বলে ডাকতেন। ওই তরুণীর দেহ দাহ করানোর নথিতেও এই সঞ্জীবের সই রয়েছে।

অপূর্ব যখন দ্রুত ময়নাতদন্ত শেষ করার ‘হুমকি’ ফোন পেয়েছিলেন তখনই কেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা পুলিশকে বিষয়টা জানালেন না, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এই নিয়ে অপূর্বকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে তদন্তকারী অফিসাররা।

নিয়ম অনুযায়ী, সাধারণত সূযাস্ত্রের পরে ময়নাতদন্ত করা হয় না। কিন্তু ৯ আগস্ট এই নিয়ম কেন ভাঙা হল তা ভাবাচ্ছে সিবিআইকে। পাশাপাশি মাত্র ৭০ মিনিটে নির্যাতিতার ময়নাতদন্ত শেষ করা হয়েছে। মামলার গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে এত দ্রুত ময়নাতদন্তের প্রয়োজন ছিল কি না তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। তাহলে কি সত্যিই কারও চাপে পড়ে তড়িঘড়ি ময়নাতদন্ত করা হয়েছে? এই বিষয়গুলিও তদন্ত করে দেখছে সিবিআই আধিকারিকরা।