দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবশেষে জঙ্গলে ফিরে গেল বাঘ। মুখ্য বনাধিকারিক নিশা গোস্বামী জানিয়েছেন, উত্তর বৈকুন্ঠপুর সংলগ্ন জঙ্গল থেকে মাকড়ি নদী পেরিয়ে আজমলমারি গভীর জঙ্গলে বাঘ ফিরে গিয়েছে৷ সোমবার সকালে কুলতলি ব্লকের অন্তর্গত মৈপীঠের কিশোরী মোহনপুর গ্রামের শ্রীকান্তপল্লি এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পাওয়া যায়৷ নদীর চরে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান এলাকার মৎস্যজীবীরা৷ খবরটি জানাজানি হতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে গোটা গ্রাম। বাঘের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করেন বনকর্মীরা ৷ মঙ্গলবার সকালে অবস্থান বদলে উত্তর-পূর্বে সরে যায় সুন্দরবনের সেই ‘অনুপ্রবেশকারী’ বাঘ।
উত্তর জগদ্দল লাগোয়া নদীর ধারে পায়ের ছাপ দেখে তার উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হন বনকর্মীরা৷ এরপর নতুন করে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জাল দিয়ে ঘেরার কাজ শুরু করেন তাঁরা। বাঘ ধরতে শুরু হয় খাঁচা বসানোর তোড়জোড়ও। লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় বাঘ চলে আসায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। জঙ্গলের পাশেই তাদের বসবাস। রুটি–রুজির জন্য তাদের জঙ্গলেও যেতে হয়। যদিও এলাকায় বাঘের উপস্থিতির টের পেয়ে জঙ্গলে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় ৷ এরপর দক্ষিণ বৈকুন্ঠপুর সংলগ্ন জঙ্গলে বাঘের উপস্থিতি টের পান বনকর্মীরা। বনদফতরের কর্মীরা জঙ্গলটিকে জাল দিয়ে ঘেরার কাজ শুরু করলে সেখান থেকে পালিয়ে যায় বাঘ। প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে উত্তর বৈকুন্ঠপুর সংলগ্ন জঙ্গলে পৌঁছে যায় সে। এরপর সেই জঙ্গলে বাঘ ধরার তোড়জোড় শুরু করেন বনকর্মীরা৷ জঙ্গলে খাঁচাও পাতা হয়। টোপ হিসেবে ছাগলও রাখা হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি৷
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাঘটিকে গভীর জঙ্গলে ফেরাতে একাধিকবার শব্দবাজি ফাটানো হয়। বুধবার সকালে জলপথে ও জালঘেরা অংশে তল্লাশি চালিয়ে বাঘের হদিস পাওয়া যায়নি। তবে উত্তর বৈকুন্ঠপুরের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আজমলমারির জঙ্গলে ফিরে যাওয়ার বাঘের ছাপ পাওয়া গিয়েছে। আর সেটি দেখেই নিশ্চিত হয় বনদফতর৷