শহিদ দিবসে শহর সচল রাখতে তৎপর কলকাতা পুলিশ থেকে কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তবে ২১ জুলাই অন্যান্য বারের মতাে কাজের দিনের পরিবর্তে ছুটির দিন হওয়ায় বেশ কিছু স্বস্তিতে কলকাতা পুলিশের কর্তারা। স্কুল, কলেজ-অফিস-আদালতমুখী নিত্যযাত্রীর সংখ্যা কম থাকায় যান নিয়ন্ত্রণেও বাড়তি চাপ থাকবেনা বলে জানালেন কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক।
তবে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি যাজনট মুক্ত রাখতে পরিকল্পনা আগে থাকতেই ছকে ফেলেছে কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। শনিবার সমস্ত প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন খােদ কলকাতা পুলিশের নগরপাল অনুজ শর্মা।
শনিবার থেকেই মঞ্চ ও সংলগ্ন এলাকা নজরদারির দায়িত্বে থাকছেন ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিক। রবিবার সকাল থেকেই ৪ জন ডিসি ও উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নেতৃত্বে মঞ্চ ও সংলগ্ন রাস্তায় বাহিনী পরিচালিত হবে। অন্যান্য বছরের কথা মাথায় রেখেই বাড়তি ৫ হাজার বাহিনী মােতায়েন করা হবে। শহরের প্রবেশ পথগুলিতে বাড়তি নজর রাখা হবে।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, শহিদ দিবসের পুলিশের শীর্ষকর্তা ও আধিকারিকরা পথে থাকবেন। বাহিনীর পাশাপাশি ৩টি কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) মঞ্চ ও সংলগ্ন এলাকায় মােতায়েন থাকবে। ভীড় সামাল দিতে ৮টি জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানাে হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স থেকে বিপর্যয় মােকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা থাকছে। মঞ্চ ও ধর্মতলা চত্বর জুড়ে বাড়তি সিসি ক্যামেরায় নজর রাখবে পলিশ। এর পাশাপাশি ড্রোনেও নজরদারি চালানাে হবে। জলপথেও রিভার ট্রাফিক নজর রাখবে।
অন্যদিকে যান নিয়ন্ত্রণেও তৎপর থাকবে কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। শনিবার রাত থেকেই রবিবার রাত ৮টা পর্যন্ত ভারী মালবাহী গাড়ি শহরে প্রবেশ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে হাওড়া-শিয়ালদহ স্টোন ও বাস ডিপােগুলােতে বাড়তি পুলিশ প্রহরা থাকছে। বেঁধে দেওয়া হয়েছে মঞ্চ অভিমুখী মিছিলগুলির যাত্রাপথ হাওড়া স্টেশন থেকে হাওড়া ব্রিজ হয়ে ব্রেবাের্ন রােড ধরে মিছিল আসবে ধর্মতলায়।
অন্যদিকে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে এসএন ব্যানার্জি রােড, ডােরিনা ক্রসিং হয়ে মঞ্চ অভিমুখী মিছিলের যাত্রাপথ নির্ধারিত হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনা, বর্ধমান, হুগলির মানুষের জন্য শ্যামবাজার হয়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভেনিউ ধরে মিছিল ঢুকবে গন্তব্যে। যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট স্ট্র্যান্ড রােড, ব্রেবাের্ন রােড, কলেজ স্ট্রিট, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, বিধান সরণী, রবীন্দ্র সরণী সহ বেশ কিছু রাস্তায়।
শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে পার্কিংও যত্রতত্র করা যাবেনা। যানজটমুক্ত রেখে শহর সচল রাখতেই এই বিধি ব্যবস্থা। ভাের ৪টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মিছিল, জনস্রোত ও বাড়তি যান চলাচলের কারণে কয়েকটি রুটের ট্রাম পরিষেবা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হবে।
অন্যদিকে শহিদ দিবস উপলক্ষে শহর অভিমুখী মানুষের বাড়তি চাপ থাকবে মেট্রোতেও। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আরপিএফের সাব ইন্সপেক্টর, এএসআই, মহিলা কন্সটেবল বাড়তি ১০০ জন বিভিন্ন স্টেশনে মােতায়েন করা থাকবে বলে মেট্রো কর্তৃীপক্ষসূত্রের খবর।
শহরে বড় কোনও অনুষ্ঠান থাকলে নিরাপত্তা আঁটোসাটো করতে অন্যান্যবারের মতাে এদিনও প্রস্তুত থাকবেন মেট্রো কর্মীরা বলে জানিয়েছেন মেট্রোর এক শীর্ষ আধিকারিক। ২৪টি মেট্রো স্টেশনেই সিসি ক্যামেরায় নজর রাখা হবে। যাত্রী পরিষেবায় বেশ কয়েকটি স্টেশনে বাড়তি টিকিট কাউন্টার খােলা। রাখার নির্দেশ দিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ।