তিনি শুধু রাজনীতিবিদই নন, ভাষাবিদও। চোদ্দটা ভাষা জানেন, তবে তা নিয়ে বড়াই করেন না। কোনও পাবলিসিটিও করেন না। মঙ্গলবার নবান্নে নিজেই একথা জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন সময়ই তাঁর কবিতা লেখা, ছবি আঁকা, গান বাঁধা নিয়ে নিন্দুকদের টিকাটিপ্পনির শিকার হতে হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে সেসবে তেমন আমল দেন না তিনি।
এদিনও মমতা নিজের গুণপনার ফিরিস্তি দিয়ে বলেন, আমি ছবি আঁকি, কবিতা লিখি। সেটা অনেকের সহ্য হয় না। নিন্দুকদের কথায় তুড়ি মেরে মমতা জানান, তিনি গুজরাতি, ভিয়েতনামি, রাশিয়ান, নাগামিজ, মণিপুরী, অসমিয়া, ওড়িয়া, মারাঠা, পাঞ্জাবি, গােখা, নেপালি, হিন্দি, উর্দু, বাংলা- চোদ্দটা ভাষা জানেন। এমনকী এই বিষয়ে কেউ তাঁকে চ্যালেঞ্জও করলেও তিনি তা গ্রহণ করতে পারেন বলে মন্তব্য করেন মমতা।
তাঁর নিজের কথায়, আমি যখন যেখানে যাই, সেখানকার ভাষা শেখার চেষ্টা করি। টেলিপ্রম্পটারে দেখে দেখে বক্তৃতা দিই না। মন থেকে যা আসে সেটাই বলতে চাই। সেই কারণে মুখ্যমন্ত্রী যখন যেখানে যান সেখানকার ভাষার সম্বন্ধে কিছুটা জ্ঞান থাকা জরুরি বলে মনে করেন।
সেই সূত্রেই ভিয়েতনাম সফরকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিখেছিলেন সেখানকার ভাষা। তিন চারবার রাশিয়া গিয়ে সেখানকার কিছু কিছু ভাষা শিখে নিয়েছিলেন। নাগাল্যান্ডে কিছুদিন কাজ করার সুবাদে নাগামিজ ভাষা আয়ত্ব করেছিলেন। তবে এতগুলি ভাষা জানেন বলে কোনও অহংকার নেই তার, প্রচারও করেন না তিনি।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনেকেই জিজ্ঞেস করেন, তার রােজগারের উৎস কী? মমতা জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি এক লক্ষ টাকা বেতন পেতে পারেন। কিন্তু তা তিনি নেন না। বিধায়ক ভাতাও নেন না। সাংসদ হিসেবে প্রাপ্য পেনশনও নেন না। কোথাও গেলে সার্কিট হাউসে থাকলেও তার ভাড়া নিজেই দেন।
মমতার কথায়, গানের অ্যালবাম থেকে, বই লিখে যেটুকু আয় হয় তাতে তাঁর একার চলে যায়। আর ছবি এঁকে যে রােজগার তিনি করেছেন, তার টাকা তিনি মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে, রাজ্যপালের ত্রাণ তহবিলে জমা দেন। একুশের নির্বাচনের আগে, তাঁর রােজগারের এই হিসেব নিকেশ দাখিল করা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।