• facebook
  • twitter
Wednesday, 13 November, 2024

পাথর দিয়ে বন্ধুকে খুন, ঝাড়খণ্ডে পালাবার আগেই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার

মদ্যপানের আসরে হরিদাসকে পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করার পরে বিক্রমের একার পক্ষে মৃতদেহ বড়গেছিয়া জঙ্গল এলাকার খড়ি খাদানের পাশের নালা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভবও নয়।

Person in handcuffs

আদিবাসী সমাজের গ্রামের পাঁচ জনের কমিটির সদস্যের পাথর দিয়ে থেঁতলানো মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বীরভূমের ঝাড়খণ্ড রাজ্য সীমানা লাগোয়া রামপুরহাট থানার বড়গেছিয়া এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। খুন হয়ে যাওয়া হরিদাস সোরেন নামে বছর চল্লিশের ওই ব্যক্তির বাড়ি বড়গেছিয়া সংলগ্ন বারমেসিয়া গ্রামে। এখানকারই খড়ি খাদান এলাকার জঙ্গলের পাশের একটি নালা থেকে হরিদাস সোরেনের থেঁতলানো মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর মাথায় ও শরীরের বেশ কয়েকটি জায়গায় ভারী কিছু দিয়ে থেঁতলানোর গভীর ক্ষত দেখতে পাওয়া যায়। পাশেই একটি রক্তমাখা পাথর পড়ে থাকতে দেখে পুলিশের প্রাথমিকভাবে মনে হয় যে, হরিদাস সোরেনকে ওই পাথর দিয়ে আঘাত করেই খুন করা হয়েছে।

পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং যেখান থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয় সেই জায়গাটি দড়ি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। বৃষ্টির জলে যাতে কোনও প্রমাণ মুছে না যায় সে জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে ওই জায়গাটির উপরে পলিথিনের আচ্ছাদনও দিয়ে দেওয়া হয়। মৃতের পিসেমশাই পিসেমশাই নীলু হেমব্রম অভিযোগ করেন যে, আগের সন্ধ্যায় হরিদাসকে তাঁর প্রতিবেশী বন্ধু বিক্রম কিস্কু বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মদ্যপানের আসর বসিয়েছিলো।

তারপর সে আর বাড়ি ফেরেনি। অথচ রাত দশটা নাগাদ বিক্রম মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে এসে ‘ফিনিশ করে দিয়েছি’ বলে চিৎকার করছিলো। মদ্যপান করে বিক্রম হামেশাই এধরনের কথাবার্তা বলতো বলে তাঁর কথার কোনও গুরুত্বও দি নি। রাতে এলাকার কয়েকটি মদ্যপানের আসরে খোঁজ করেও হরিদাস সোরেনের সন্ধান মেলেনি। হরিদাস সোরেন দিনমজুরের কাজ করার সাথে সাথে খড়ি খাদানেও কাজ করতো। সকালে সেই হরিদাস সোরেনের থেঁতলানো মৃতদেহ বড়গেছিয়া এলাকার খড়ি খাদানের পাশের জঙ্গলের নালাতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে হরিদাস সোরেনের মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসতেই নিরুদ্দেশ হয়ে যায় বিক্রম কিস্কু। মৃতের ছেলে চন্দন সোরেন বলেন, বিক্রমের সঙ্গে বাবার কোনও শত্রুতা ছিলো না।

তবু সে কেন বাবাকে এভাবে পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করলো তা বুঝতে পারছি না। তিনি বিক্রম কিস্কুকে গ্রেপ্তারের দাবি জানালেও, পুলিশ বিক্রমের সন্ধান না পেলেও, পুলিশ আশঙ্কা করছিলো যে, বিক্রম কিস্কু প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডে পালাতে পারে। তাই পুলিশ ঝাড়খণ্ড রাজ্য সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়ে ২৫ অক্টোবর রাতে বিক্রম কিস্কুকে ঝাড়খণ্ড সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশি জেরায় বিক্রম কিস্কু হরিদাস সোরেনকে মদ্যপানের আসরেই পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করার কথা স্বীকার করেছে বলে জানা গিয়েছে। মদ্যপানের আসরে হরিদাসকে পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করার পরে বিক্রমের একার পক্ষে মৃতদেহ বড়গেছিয়া জঙ্গল এলাকার খড়ি খাদানের পাশের নালা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভবও নয়। তাহলে হরিদাস সোরেনকে খুনের সাথে কী আরও কেউ কেউ জড়িত রয়েছে ? সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখছে পুলিশ ।