তৃণমূল-বিজেপির মহামিছিলে অবরুদ্ধ খড়গপুর

শুভেন্দু অধিকারী (File Photo: Twitter/@AITCofficial)

বিজেপি এবং তৃণমূলের মহামিছিলে নির্বাচনী প্রচারের শেষলগ্নে সকাল এগারােটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্তু অবরুদ্ধ হয়ে পড়ল খড়গপুর শহর।

এদিন সকাল সাড়ে এগারােটা নাগাদ ইন্দা রিলায়েন্স পেট্রোল পাম্প থেকে শুরু হয় বিজেপির মহামিছিল। প্রার্থী প্রেমচন্দ্র ঝা’য়ের সঙ্গে এই মহামিছিলে ছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সাংসদ দিলীপ ঘােষ, সাংসদ ও গায়ক মনােজ তিওয়ারি, সাংসদ সুভাষ সরকার, কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। মিছিলে আদিবাসী মানুষের উপস্থিতি এবং কর্মী সমর্থকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতাে।

ইন্দা কলেজ, লােকাল থানা, ট্রাফিক, বাসস্ট্যান্ড, গােলবাজার হয়ে রামমন্দিরে শেষ হয় এই মহামিছিল। ভারত মাতা কি জয়, জয় শ্রীরাম ধ্বনি, প্রধানমন্ত্রী মােদির মুখােশে সুবিশাল বর্ণাঢ্য মিছিল শহরকে স্তব্ধ করে দেয়। হুড খােলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে অবিরাম ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে গিয়েছেন দিলীপ, কৈলাস, সুভাষরা। মিছিলকে ক্যামেরাবন্দি করার জন্য পথচলতি মানুষদের মধ্যে হুড়ােহুড়ি বুঝিয়ে দিচ্ছিল বিজেপিকে ঘিরে খড়গপুরের মানুষের বাড়তি আবেগ শেষ হয়ে যায়নি।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতা বলেন, গত তিনদিনে আমাদের মধ্যে দিলীপদার উপস্থিতি শহরের ছবিটা পালটে দিয়েছে। এই উন্মাদনাই তার বহিঃপ্রকাশ। আমরা অনেকটাই পিছন থেকে শুরু করেছিলাম। প্রদীপ সরকার প্রচারের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন। সঙ্গে ছিল পুলিশ এবং প্রশাসন। সেই ছবিটা প্রচারের শেষ তিনদিন অনেকটাই ঘুরিয়ে দিতে পেরেছেন বলে দাবি বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের।

রামমন্দিরে বিজেপির মিছিল যখন বেলা তিনটে নাগাদ শেষ হচ্ছে। ঠিক তখনই খরিদা বড়বাতি থেকে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে শুরু হয় তৃণমূলের মহামিছিল। মেদিনীপুর সদর ব্লক কেশপুর, পিংলা, নারায়ণগড় থেকে বহু মানুষকে নিয়ে আসা হয়। এক তৃণমূল নেতা বলেন এটা শুভেন্দুদার নির্দেশ। ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ওয়ার্ড সভাপতি, পর্যবেক্ষকরা মিলিতভাবে ছােট ছােট মিছিল করবেন। তারা মহামিছিলে অংশ নেবেন না। বড়বাতি থেকে গােলবাজার ট্রাফিক হচ্ছে ইন্দামােড়ে শেষ হয় এই মহামিছিল। মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, অজিত মাইতি জেলার বিধায়করা এই মিছিলে উপস্থিত ছিলেন।

বিজেপি জেলা সহ সভাপতি গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, ওয়ার্ড নং ১৩, ১৫, ১৮ পুরপ্রধান তথা তৃণমূল প্রার্থী নিজের ওয়ার্ড ২০, ওয়ার্ড নং ২৯ এর কয়েকটি বুথ, ৬, ৮, ১, ১২, ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি বুথ দখল করে। ভােট লুঠ করার চক্রান্ত করেছে তৃণমূল। আমরা চাই প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ান থাকুক।

ইতিমধ্যেই ৫ কোম্পানির কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান এসেছে। আরও বাড়তি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান রবিবার সকালে ঢুকবে। দুই প্রতিপক্ষের লড়াইয়ের মাঝখানে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী চিত্তরঞ্জন মন্ডল প্রচারপর্ব শেষ হবার পর মন্দিরতলায় চাচা জ্ঞানসিং সােহনপালের সমাধিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান চিত্তবাবু। তিনি বলেন, চাচা ২০১৬ সালে হেরে গিয়েছিলেন একটা চক্রান্তের শিকার হয়ে। খড়গপুরের মানুষ তারই বদলা নেওয়ার জন্য আগামী ২৫ নভেম্বর ভােট দেবে।