‘মাতাল তোমাকে জানতে হবে’ ব্যানারে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশপুত্তলিকা দাহ

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (ছবি: IANS)

ধিকিধিকি জ্বলতে থাকা আগুন দাউদাউ হয়ে জ্বলল শনিবার। পুড়ল শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশপুতুল। পোড়ালেন কারা? সবাই তৃণমূল কর্মী। কিন্তু তৃণমুলের ব্যানারে নয়। সাধারণ নাগরিক হয়ে কল্যাণের কুশপুতুল জ্বালালেন তাঁরা।

এদিন কলকাতার দু’জায়গায় কুশপুতুল পুড়ল শ্রীরামপুরের সাংসদের। তাঁর বাড়ির অদুরেই ভবানীপুর যদুবাবুর বাজারে এদিন পোস্টার, ব্যানার নিয়ে কুশপুতুল পোড়ালেন একদল যুবক।

তাঁরা স্লোগান দেন, ‘মাতাল তোমায় জানতে হবে, আগামীকে মানতে হবে। প্রত্যেকেই বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে অপমান করেছেন কল্যাণবাবু। এ জিনিস চলবে না। অভিষেক তাঁদের নেতা।


তাঁরা কিছুতেই এটা মেনে নেন না এই ঘটনা নিয়ে এদিন প্রতিক্রিয়া জানার জন্য দ্য ওয়াল-এর তরফে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল।

কিন্তু তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। পরে প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেলে এই প্রতিবেদনে আপডেট করা হবে। যদুবাবুর বাজারের পর কলকাতা পুরসভার ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডেও একই ধরনের বিক্ষোভ ও কুশপুতুল পোড়ানোর কর্মসূচি করেন লেক রোড এলাকার কিছু যুবক।

তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁরা দলের পক্ষ থেকে নয়, স্থানীয় ক্লাবের পক্ষ থেকে কল্যাণকে ধিক্কার জানাচ্ছেন। এই লেক রোড এলাকারই এক যুবক বলেন, ‘শ্রীরামপুরে নতুন সাংসদ করতে হবে। যিনি দলের সাধারণ সম্পাদককে অপমান করেন সেই সাংসদকে তাঁরা কিছুতেই মেনে নেবেন না।’

লেক রোডের যুবকরা স্পষ্ট করেই জানান, তাঁরা দলের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি করছেন না। তবু তাঁদের বক্তব্য, দলের মধ্যে থেকে কখনও এই ধরনের কাজ করা যায় না প্রসঙ্গত, গতকাল রাতেই অভিষেকের খুড়তুতো ভাই আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি তুলেছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়ার।

ফেসবুক পোস্টে একটি পোস্টার পোস্ট করেছিলেন আকাশ। তাতে লেখা ছিল, ‘শ্রীরামপুর নতুন সাংসদ চায়।’ সেইসঙ্গে এও বলেছিলেন, “নিজেকে হাসির পাত্র না করে, পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেওয়া উচিত।’

এদিন সেই আওয়াজই ধ্বনিত হল ভবানীপুর এবং লেক রোডে। অনেকের মতে, কল্যাণের বক্তব্য নিয়ে যা শুরু হয়েছে তাতে গোটা বিষয়টিকে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব আটকাচ্ছেন না সেইসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীরবতা নিয়েও কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন।

শুক্রবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছিলেন, ‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী চুপ কেন? তাঁর দলের সাংসদ সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তিনি নীরব?

এই নীরবতাই স্পষ্ট করে দিচ্ছে, ভাইপোর সঙ্গে তাঁর বিরোধ শুরু হয়েছে। সে যাই হোক, কল্যাণের বিরুদ্ধে যে ‘অভিষেকপন্থীরা’ রাস্তায় নেমে পড়েছে এবং সেই আগুন যে দাবানলের চেহারা নিচ্ছে তা স্পষ্ট।