কাকু’র কণ্ঠস্বর: ইডি-র পর এবার নমুনা চাইল সিবিআই

প্রাথমিক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন ‘কালীঘাটের কাকু’। এজন্য তাঁর কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে বড় হাতিয়ার। এর আগে ইডি কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা চেয়ে পাঠিয়েছিলেন। এবার তদন্তের স্বার্থে সেই নমুনা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই-ও চেয়েছে। বৃহস্পতিবার বিশেষ আদালতে সিবিআই এই আবেদন জানিয়েছে। এজন্য তাঁকে হেফাজতে পেতে চাইছে সিবিআই। তবে ‘শোন অ্যারেস্ট’ না দেখানো পর্যন্ত তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আদালতে দাবি করেছে, নিয়োগ কাণ্ডের তদন্ত এই মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিয়েছে। সেজন্য কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র এবং শান্তনুকে জেরা করলে এই মামলায় মূল্যবান সূত্র পাওয়া যেতে পারে। সেজন্য তাঁদের হেফাজতে পেতে চাইছে সিবিআই। তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে পার্থ ঘনিষ্ঠ সন্তু গঙ্গোপাধ্যায় এবং হুগলি জেলায় তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা শান্তনুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চাইছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।

যদিও শারীরিক অসুস্থতার কারণে বৃহস্পতিবার সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে হাজিরা দিতে পারেননি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তা সত্ত্বেও তাঁকে ‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখাতে চাইছে সিবিআই। এ বিষয়ে বিচারক প্রশ্ন তোলেন, সিবিআই কেন তাঁকে হেফাজতে নিতে এত মরিয়া হয়ে উঠেছে? কেন তাঁকে হাজির করাতে চাইছে, আদালতের সামনে সেটা স্পষ্ট করতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। এদিন বিচারক সাফ জানিয়ে দেন, সশরীরে হাজিরা না দেওয়া পর্যন্ত কাউকে হেফাজতে নেওয়া যাবে না। সিবিআই হেফাজতে নিতে চাইলে আগে সুজয়কৃষ্ণকে আদালতে হাজির করাতে হবে।


তখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানায়, ‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা তাঁদের কাছে খুবই জরুরি। এরপর বিচারক পাল্টা প্রশ্ন করেন,’আপনারা আজই কেন গ্রেপ্তার করতে চাইছেন? আর উনিই বা দু’দিন ধরে কেন সশরীরে আসতে পারছেন না? ওঁকে যে হাজির করানো যাচ্ছে না, তার কারণ সত্য কি না, তা-ও তো যাচাই করে দেখা উচিত! এর জন্য রিপোর্ট দিতে হবে যে, কেন ওঁকে দু’দিন ধরে হাজির করানো গেল না।’

এরপর বিচারক সুজয়কৃষ্ণকে সশরীরে শুক্রবার সশরীরে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ওইদিন সন্তু ও শান্তনুরও হাজিরা দেওয়ার কথা রয়েছে। সেইসময় ‘কাকু’কে আদালতে হাজির করানো গেলে তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার অনুমতি পাবে সিবিআই।

প্রসঙ্গত বর্তমানে জেলে রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু’। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২৩ সালের ৩০ মে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ইডি। গ্রেপ্তারের পর দীর্ঘদিন তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানে তাঁর হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। কিন্তু সেসময় তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ নিয়ে বিভিন্ন আইনি জটিলতা তৈরি হয়। অবশেষে গত ৩ জানুয়ারি জোকা ইএসআই হাসপাতালে ইডি ‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করে। এবার সিবিআই তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চাইছে। সেই সঙ্গে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতেও চাইছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।