জুনিয়ার চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য ভবন অভিযান, ডেপুটেশন জমা দিয়ে ফিরতে হল হতাশ মুখে, বৃহত্তর আন্দোলনের পথে ডাক্তাররা?

আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য সহ গোটা দেশ৷ সেই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার আর জি করের আন্দোলনরত জুনিয়ার চিকিৎসকরা একটি মিছিল বার করেন৷ মিছিলে শামিল হন সিনিয়র চিকিৎসকরাও৷ বুধবার বেলা ১২টায় সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে জমায়েত করেন আন্দোলনরত চিকিৎসকরা৷ সিবিআইয়ের উপর চাপ বাড়াতে ও তদন্তের গতি বৃদ্ধির দাবিতে জমায়েতের জন্য মূলত সিজিও কমপ্লেক্সেকেই বেছে নেন তাঁরা৷ সেখান থেকে স্বাস্থ্যভবনের দিকে ডেপুটেশন জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে এগিয়ে চলে তাঁদের মিছিল৷ চিকিৎসকদের অভিযোগ, আর জি করের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাসপাতালে আসছেন না৷ ফলে অধ্যক্ষের সঙ্গে তাঁরা দেখা করতে পারছেন না৷ স্বাস্থ্যভবন থেকে তিনি দায়িত্ব সামলাচ্ছেন৷

সন্দীপ ঘোষকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন৷ বদলে সেই পদে আনা হয় সুহৃতা পালকে৷ কিন্তু আরজি করের চিকিৎসকদের দাবি, নতুন অধ্যক্ষকের দেখা মেলে না মেডিক্যাল কলেজে৷ সেই অভিযোগের ভিত্তেতেই বুধবারের মিছিলে নামেন চিকিৎসকরা৷ হাতে ‘নিখোঁজ অধ্যক্ষ’ লেখা পোস্টার নিয়ে রাস্তায় নামতে দেখা যায় তাঁদের৷ একে অপরের হাত ধরে তাঁরা এগিয়ে চলেন স্বাস্থ্য ভবনের দিকে৷

এদিন কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় ঘিরে ফেলা হয় স্বাস্থ্য ভবন চত্বর৷ স্বাস্থ্য ভবনের সামনেই ৩৫ সদ্যসের একটি প্রতিনিধি দল তৈরি করা হয়৷ ওই প্রতিনিধি দল স্বাস্থ্য ভবনের ভিতরে গিয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা কৌস্তভ নায়েকের সঙ্গে দেখা করেন৷ প্রতিনিধি দল ভিতরে গেলেও, বাকি চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য ভবনের বাইরেই অবস্থানে বসেন৷ দুপুর আড়াইটে থেকে সাডে় চারটে পর্যন্ত প্রায় দু’ঘণ্টা স্বাস্থ্য ভবনে বৈঠক করেন চিকিৎসকদের ওই প্রতিনিধি দল৷ তবে স্বাস্থ্য ভবন থেকে স্পষ্টতই হতাশ হয়ে ফিরত হল আন্দোলনকারীদের৷ চার দফা দাবিতে এদিন স্বাস্থ্য ভবনে ডেপুটেশন জমা দিয়েছেন তাঁরা৷ সেই ডেপুটেশনে, প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বদলি সংক্রান্ত নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়৷ আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের সময় হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদেরও অপসারণের দাবি জানানো হয়৷ পাশাপাশি, আর জি করে ভাঙচুরের ঘটনায়, সে দিন হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের অপসারণের দাবি তোলা হয়েছে৷ ১৪ আগস্ট আর জি করে ভাঙচুরের ঘটনার পর থেকে বর্তমান অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল হাসপাতালে আসছেন না৷ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না চিকিৎসকরা৷ সেই মর্মে তাঁরও অপসারণের দাবি উঠেছে ডেপুটেশনে৷


আন্দোলনকারীরা জানান, স্বাস্থ্য ভবনকে তাঁরা এক ঘণ্টা সময় দিয়েছিলেন৷ কিন্তু অধিকর্তারা মৌখিকভাবে বিষয়টা ভেবে দেখবেন বলে জানালেও কোনও আশ্বাস পাওয়া যায়নি তাঁদের তরফে৷ এর ফলে আন্দোলন জারি থাকবে বলেই জানিয়েছেন জুনিয়ার ডাক্তাররা৷ ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটার কথা বাবা হচ্ছে৷