নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় জামিয়ত উলেমায়ে হিন্দের মহাসমাবেশ

এনআরসি-সিএবি'র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। (Photo by Money SHARMA / AFP)

নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে যখন গােটা দেশ জুড়ে প্রতিবাদে উত্তাল, সােচ্চার বিক্ষোভকারীরা। বাংলাতেও মােদির নেতৃত্বে ঘােষিত নয় নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি’র বিরুদ্ধে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে মানুষ। সেই আবহেই পার্ক সার্কাস ময়দানে এক বিশাল সমাবেশের আয়ােজন করে জামিয়ত উলেমায়ে হিন্দের বাংলার শাখা।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি যখন একদিকে কলকাতার এক প্রান্তে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সেই সময় শহরের অন্য প্রান্তে মােদি বিরােধী সভায় উপচে পড়ল জনস্রোত। ব্রিটিশের হাত থেকে স্বাধীনতা নিয়ে আনা দেশবাসীর পরবর্তি প্রজন্মের কাছ থেকেই নাগরিকত্বের দাবি করছে বর্তমান কেন্দ্রীয় শাসক গােষ্ঠি। আর তার তীব্র বিরােধিতা করতেই পার্ক সার্কাস ময়দানে এই জনসভা বলে জানালেন সংগঠনের পশ্চিমবঙ্গ শাখার সাধারণ সম্পাদক ক্কারী শামসুদ্দীন আহমেদ। বাংলার প্রাণকেন্দ্র কলকাতায় আয়ােজিত সংগঠনের এই গণ আন্দোলনে উপস্থিত ছিলেন সর্ব ভারতীয় সভাপতি সৈয়দ আরশাদ মাদানি। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সংগঠনের বিশিষ্টজনেরা।

উল্লেখ্য, জামিয়ত উলেমায়ে হিন্দ একটি অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদী সংগঠন। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় এই সংগঠনের সদস্যদের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। আজ একটি আইন প্রণয়ণের মধ্যে দিয়ে যেভাবে দেশ বিভাগের চেষ্টা চালানাে হচ্ছে তার তীব্র বিরােধিতা করেন এই সংগঠনের বর্তমান সদস্যরা। আর তাই এই জনসভা থেকে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের ভরসা জোগাতেই বক্তব্য রাখেন জামিয়ত উলেমায়ে হিন্দের প্রতিনিধিরা। তাদের পাশে এই আন্দোলনে সামিল হন স্বরাজ ইন্ডিয়ার সভাপতি যােগেন্দ্র যাদব, অল বেঙ্গল মাইনরিটি ইয়ােথ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ কামরুজ্জামান, সুকৃতি রঞ্জন বিশ্বাস, অমিতাভ চক্রবর্তি সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা।


দিল্লি থেকে এই সভায় হাজির হন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সৈয়দ আরশাদ মদানি। তিনি সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, যে কোনও মূল্যে সংবিধান অক্ষুন্ন রাখার চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাব। এর পাশাপাশি এনপিআর’রও তীব্র বিরােধিতা করেন তিনি। আরও জানান, এনপিআর নিয়ে আগে যে পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া ছিল তা যদি বহাল রাখা হয় তা হলে কারাে কোনও আপত্তি থাকতে পারেনা। তবে নয়া নাগরিকত্ব আইনের পাশাপাশি এনপিআর’এও নতুন কলাম যুক্ত হয়েছে যা গনতন্ত্র বিরােধী। তাই তা অচীরেই বন্ধ হওয়া জরুরি বলে উল্লেখ করেন সৈয়দ আরশাদ মদানি।

অন্যদিকে অল বেঙ্গল মাইনরিটি ফোরামের সভাপতি মহম্মদ কামরুজ্জামান জনসভায় বলেন, আইনের জন্য মানুষ নয়, মানুষের জন্য আইন। যে আইন মানুষের নাগরিকত্বকেই চ্যালেঞ্জ করছে সেই আইন অবিলম্বে প্রত্যাহার করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই সভা থেকেই আবেদন জানান তিনি। সভায় হাজির ছিলেন স্বরাজ ইন্ডিয়ার সভাপতি যােগেন্দ্র যাদব। দিল্লি থেকে কলকাতায় শুধু এই সভায় যােগ দেওয়ার জন্য উপস্থিত ছিলেন তিনি। মােদি সর্বত্র পােশাকের রঙ দেখতে পান। কিন্তু জাতীয় পতাকা দেখতে পান না বলে কটাক্ষ করেন।