রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে জেলবন্দি রয়েছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তা সত্ত্বেও এখনও খাদ্য দপ্তরের অধীন পশ্চিমবঙ্গ অত্যাবশ্যক পণ্য সরবরাহ নিগমের (এসেনশিয়াল কমোডিটিজ সাপ্লাই কর্পোরেশ) চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন তিনি। এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। জেলবন্দি থাকা সত্ত্বেও কীভাবে তিনি এখনও এই কমিটির চেয়ারম্যান রয়ে গিয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে গ্রেপ্তারের পরেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জ্যোতিপ্রিয়কে মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে রেখে দিয়েছিলেন। পরে জ্যোতিপ্রিয়র পরিবারের অনুরোধেই গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই সময় পশ্চিমবঙ্গ অত্যাবশ্যক পণ্য সরবরাহ নিগমের চেয়ারম্যানের পদ থেকে তাঁকে সরানো হয়নি। এই কমিটিতে ২৩ জন রয়েছেন। যার চেয়ারম্যান হিসেবে এখনও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম দেখা যায় নিগমের নিজস্ব ওয়েবসাইটে।
উল্লেখ্য, খাদ্য দপ্তরের তরফে খাদ্যশস্য সংগ্রহ, মজুদ, সরবরাহ ও বণ্টনের কাজ করে পশ্চিমবঙ্গ অত্যাবশ্যক পণ্য সরবরাহ নিগম। মূলত কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার কাজ করে এই নিগম। নিগমের সমস্ত কাজ দেখেন সরকারি আধিকারিকরা। তাই চেয়ারম্যানের সেই অর্থে কোনও ভূমিকা থাকে না।
এই বিতর্ক নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে রাজি হননি খাদ্য দপ্তরের কোনও কর্তা। পশ্চিমবঙ্গ অত্যাবশ্যক পণ্য সরবরাহ নিগমের চেয়ারম্যান পদে জ্যোতিপ্রিয়কে বসিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তাঁর এই পদ নিয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না। ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর খাদ্যমন্ত্রী হন জ্যোতিপ্রিয়। ২০১২–১৬ সাল পর্যন্ত তিনিই এই নিগমের দায়িত্ব সামলেছিলেন। ২০১৬ সালে একজন আমলাকে নিগমের চেয়ারম্যান করা হয়।
২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সেই আমলাই চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। তারপর জ্যোতিপ্রিয়কে ফের নিগমের চেয়ারম্যান করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময় খাদ্য দপ্তরের দায়িত্বে তিনি ছিলেন না। তখন থেকে আজ পর্যন্ত এই পদে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক রয়েছেন। অনেকে মনে করেন, খাদ্য দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে অভিজ্ঞতা থাকায় নিগমের চেয়ারম্যান হিসেবে জ্যোতিপ্রিয়র উপর ভরসা করেছিলেন মমতা। যদিও তখন মমতার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।