আগামী ২৮ জানুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসব। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন বিতর্কের পরেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে।
শিক্ষা দফতরের নতুন নিয়মানুসারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়ােজনে রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ নাও জানাতে পারেন। কিন্তু সমস্ত কিছু জেনেও রাজ্যপাল তথা আচার্য জগদীপ ধনকড় বুধবার ফের জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিয়ম অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। আর রাজ্যপালের এই মন্তব্য নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এলে তিনি বিক্ষোভের সম্মুখীন হবেন। অন্যদিকে তৃণমূলের কর্মচারী সংগঠনও ঘােষণা করেছে রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে বিক্ষোভ হবেই।
সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক সমালােচনার জেরে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব হন শাসকদলের নেতারা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কাণ্ড নিয়ে সরকারকে একহাত নিয়েছিলেন রাজ্যপাল। প্রতিবাদ বিক্ষোভের জেরে তাঁকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দেয় পড়ুয়ারা। আচার্য বেরিয়ে যাওয়ার পরেই শুরু হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে না পেরে গণতন্ত্রের হত্যাকরা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। রাজ্যপালের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রীও।
সরকারকে লাগাতার আক্রমণের জেরে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজ্যপালকে চুপ করে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, চুপ করে থাকলে তাতে রাজ্যপালের সম্মান বাড়বে। অন্যদিকে রাজ্যপালও মনে করেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে না গেলে সমস্যার কথা জানতে পারবেন না। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন ছিল, সমস্যা না জানতে পারলে সমস্যার সমাধান করবেন কি করে?
বুধবার রাজ্যপাল সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, আমার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই। আমি আনন্দিত, এবছর সমাবর্তনে বিশেষ সংবর্ধনা পাচ্ছেন নােবেনজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দেশের গর্ব। আমি সমাবর্তনে উপস্থিত থাকব। তবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতাে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে একই রকমের অভ্যর্থনা পান কিনা, সেটাই এখন দেখার।
মঙ্গলবার রানি রাসমণি রােডে তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের ধর্না মঞ্চে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যের উপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রাজ্যপাল। তিনি প্রশ্ন তােলেন, রাজনৈতিক মঞ্চে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের উপস্থিতি মােটেই কাম্য নয়, কেন তাঁরা শাসকদলের মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন, সেব্যাপারে জবাব চেয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ।