১৪৪ বছরে একবারই আসে মহাকুম্ভে পুণ্যস্নানের সুযোগ। আর তাই সকলেরই গন্তব্য হয় উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজ। কোটি কোটি মানুষের ভিড়ে প্রয়াগে দুর্ঘটনাও ঘটছে। ঠিক সেই ভাবেই কুম্ভমেলায় গিয়েই হারিয়ে গিয়েছিলেন সুন্দরবনের বৃদ্ধা গীতা মণ্ডল। পুণ্যস্নানে গিয়ে মাকে হারিয়ে যোগীরাজ্যের পুলিশের দ্বারস্থ হন বৃদ্ধার ছেলে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। অবশেষে এ রাজ্যেরই যাদবপুরের বাসিন্দা এক মহিলার উদ্যোগে ঘরে ফিরলেন তিনি।
ছেলে গৌরাঙ্গ মণ্ডলের সঙ্গে পুণ্যস্নানের জন্য মহাকুম্ভে গিয়েছিলেন গীতা মণ্ডল। ৬০ বছর বয়সী গীতাদেবী সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের সাতজেলিয়া দয়াপুরের রেণুকানগর মৃধাপাড়ার বাসিন্দা। কিন্তু মহাকুম্ভে গিয়ে হারিয়ে যান তিনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও মায়ের খবর না পেয়ে রীতিমতো ভেঙে পড়েন গৌরাঙ্গ মণ্ডল। প্রয়াগরাজ কমিশনারেটের অধীনস্থ কোতবালি ঝুন্সি থানার দ্বারস্থ হন তিনি। এদিকে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে আতান্তরে পড়েন বৃদ্ধা।
প্রয়াগরাজের ঝুন্সি স্টেশনে বসে বৃদ্ধা গীতাদেবী কাঁদছিলেন। সেই সময় যাদবপুরের মহিলার গার্গী ওঝা বিষয়টি লক্ষ্য করেন। বৃদ্ধার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন তিনি। কোনওভাবেও যোগাযোগ করতে না পেরে তাঁকে সঙ্গে নিয়েই হাওড়াগামী ট্রেনে উঠে পড়েন। পরবর্তীতে গীতাদেবী জানান, তাঁর মেয়ের বাড়ি বিধাননগর উল্টোডাঙা এলাকায়। কলকাতায় পৌঁছে গীতাদেবীকে উল্টোডাঙায় তাঁর মেয়ের বাড়িতে পৌঁছে দেন গার্গীদেবী। ছেলে গৌরাঙ্গও মায়ের ফেরার খবর পান।
গৌরাঙ্গ জানিয়েছেন, যাদবপুরের গার্গীদেবী মাকে উল্টোডাঙা এলাকায় দিদির বাড়িতে সুস্থ অবস্থায় পৌঁছে দিয়েছেন। বাংলায় ফিরে মায়ের সঙ্গে দেখা করব। অন্যদিকে গার্গী ওঝা জানিয়েছেন, প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভে গিয়েছিলাম পুণ্যস্নান করতে। সেখানেই ওই বৃদ্ধাকে দেখতে পাই। ওনাকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দিতে পেরে ভালো লাগছে। মহাকুম্ভে পুণ্যস্নান করা সফল হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
এর আগে কুম্ভমেলায় নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া মুকুন্দপুরের বৃদ্ধাকে বাড়ি ফিরিয়েছিলেন ইসলামপুরের এক যুবক। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১০ জানুয়ারি মেয়ে রুমা হালদারের সঙ্গে প্রয়াগরাজে গিয়েছিলেন ৭৭ বছরের বৃদ্ধা কৃষ্ণা সরকার। ১৬ জানুয়ারি গঙ্গাস্নান করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। প্রচন্ড ভিড়ে মেয়ে ও মায়ের মধ্যে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে যায়। এর ফলে সমস্যায় পড়েন কৃষ্ণাদেবী। ইসলামপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় কুন্ডু বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলেন। এরপর তিনি বৃদ্ধাকে কলকাতার বাড়িতে পৌঁছে দেন।