• facebook
  • twitter
Monday, 31 March, 2025

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে ভাস্কর গুপ্তকে সরালেন রাজ্যপাল

যাদবপুরের উপাচার্য পদ থেকে ভাস্কর গুপ্তকে সরালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবনের তরফে ইতিমধ্যেই এই মর্মে চিঠি পাঠানো হয়েছে উপাচার্যকে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে ভাস্কর গুপ্তকে সরালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে এই মর্মে নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের এপ্রিলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদের দায়িত্ব পেয়েছিলেন ভাস্কর গুপ্ত। নথি অনুযায়ী, চলতি মাসের ৩১ তারিখ অবসর গ্রহণ করার কথা তাঁর। তার মাত্র কয়েকদিন আগে, ২৭ মার্চ রাজভবনের তরফে উপাচার্যকে সরানোর চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠির বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন।

ওয়েবকুপার বৈঠককে কেন্দ্র করে গত একমাস ধরে উত্তাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ওই সভায় যোগ দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন। বিক্ষোভের জেরে অসুস্থও হয়ে পড়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, মন্ত্রীর গাড়ির ধাক্কায় আহত হন যাদবপুরের এক ছাত্রও। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন পড়ুয়ারা। ওই ঘটনার পর বারবার সদ্য প্রাক্তন উপাচার্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মাঝে অসুস্থও হয়ে পড়েন ভাস্কর গুপ্ত। ফলে প্রশ্ন উঠছে, অশান্তির জেরেই কি ভাস্কর গুপ্তকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিলেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস?

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হল। রবীন্দ্রভারতী থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, যে ভাবে অচলাবস্থার দিকে এগিয়েছে, যাদবপুরও সেই পথে এগোচ্ছে।  যাদবপুরকে শাটডাউন করে দেওয়া হল।’ অবসরের মাত্র তিন দিন আগে উপাচার্যকে সরিয়ে তাঁকে অপমান করা হল বলে দাবি করেছেন ব্রাত্য। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। ব্রাত্য বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া তালিকা থেকে এক জনকে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা যেত। রাজ্যপাল সেটা করলেন না, উল্টে অচলাবস্থা তৈরি করলেন।’

ভাস্করের অপসারণের ফলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আপাতত উপাচার্যহীন। এর ফলে নতুন করে জটিলতা তৈরির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। অপসারণ প্রসঙ্গে ভাস্কর গুপ্ত বলেন, ‘২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল থেকে আমি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েছিলাম। অবসরের চার দিন আগে এই চিঠি দেওয়া হল। ৩১ মার্চ পর্যন্ত আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স ও টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে থাকব। উপাচার্য থাকালীন যাদবপুরের উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করেছি। কেন এই নির্দেশ, তার কোনও কারণ লেখা নেই ওই চিঠিতে। মাননীয় আচার্যের অধিকার আছে, তিনি যা নির্দেশ দেবেন, সেটাই হবে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়কে ভালোবাসি। ভালো, খারাপ লাগার ঊর্ধ্বে আমি। যখন বিশ্ববিদ্যালয় ডাকবে আমি থাকব।’

মেয়াদ শেষের আগে স্থায়ী উপাচার্য পদে নিয়োগ চেয়ে কয়েকদিন আগেই চিঠি পাঠানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক সংগঠন ‘জুটা’ চিঠিতে লেখে, স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ না করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনি অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে রাজ্যপাল রাজ্যের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। আরও ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ এখনও বাকি। তার মধ্যে রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ও।