বর্ধমানে খুন হওয়া মৃত আদিবাসী তরুণীর বাড়িতে এলেন আইএসএফ-এর বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী

বর্ধমানের অদূরে নান্দুর ঝাপানতলা এলাকায় খুন হওয়া আদিবাসী যুবতীর মৃত্যুতে আন্দোলন ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। ওই এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন ছাড়াও অন্য এলাকার বাসিন্দারা বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল। বর্ধমান থানা ঘেরাও থেকে শুরু করে সশস্ত্র মিছিল এর পর রবিবার থেকে জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করার ডাক দেওয়া হয়েছে। জানিয়ে দেওয়া হয় এই অবরোধ অনির্দিষ্টকালের জন্য। ফলে জেলা প্রশাসনের চাপ বাড়ছে বলে সূত্রের খবর। এদিকে আদিবাসী দের আন্দোলনে সহমত জানিয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী । তিনি এসে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করেন। একই সঙ্গে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। অন্যদিকে এসএফআই নেত্রী মিনাক্ষী মুখার্জিও বর্ধমানে এসে আদিবাসী পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তীব্র ভাষায় নিন্দা করেন হত্যার ঘটনা নিয়ে।

গত বুধবার রাতে নান্দুর গ্রামের সাঁওতাল যুবতী প্রিয়াঙ্কা হাঁসদা কে গলার নলি কেটে খুন করা হয়। বাড়ি থেকে কিছু দুরে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সুপার সহ অন্যান্য আধিকারিকরা জানিয়েছেন তদন্ত চলছে। তবে এ খবর লেখা পর্যন্ত গ্রেপ্তারের কোন খবর নেই। এদিকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীর খুনের ঘটনায় শুরু থেকেই সরব আদিবাসী সংগঠনের লোকজন। তারা লাগাতার আন্দোলন শুরু করেছেন। ঘটনার পর দিনই সশস্ত্র মিছিলে সামিল হন আদিবাসী পুরুষ মহিলারা। এর পর বর্ধমান থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান তারা। রবিবার পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী ১৯ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের সদস্যরা। এদিকে শনিবারই আইএসএফয়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। তিনি পরিবারের সকলের সঙ্গে কথা বলেন এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, গোটা গ্রাম আতঙ্কের মধ্যে আছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগে গ্রামের মানুষের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। গতকাল আরজিকরে মহিলা ডাক্তারের হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দোষীদের ফাঁসির দাবি তুলেছিলেন এক্ষেত্রেও আসল দোষীকে বের করে ফাঁসি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

একই সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ডিওয়াইএফআই এর সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি, এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায় চৌধুরী সহ অন্যান্যরা। যদিও পরিবারের পাশে থাকতে অনেকেই যোগাযোগ শুরু করেছেন। রায়ান গ্রামের বাসিন্দা তথা বিশিষ্ট সমাজসেবী বিশ্বেশ্বর চৌধুরীও ওই পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তিনি এই ধরনের নিশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দোষীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ ও প্রশাসনের আরও তৎপরতা দাবি করেন। একই সঙ্গে ওই অসহায় পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিতে সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।


অন্যদিকে যুবতীর খুনের প্রায় চার দিন কেটে গেলেও এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আর এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। আরজি কর নিয়ে সারা দেশে আন্দোলন হলেও পিছিয়ে পড়া একটি পরিবারের মেয়েকে নিংশসভাবে খুন হলেও সে ভাবে সরব নয় অনেকেই। এ দাবিও উঠতে শুরু করেছে।নওসাদ সিদ্দিকী অবশ্য হুঁশিয়ারি দেন প্রয়োজন হলে আমরা হাইকোর্টে যাব এবং সিবিআই তদন্তের দাবী করব।