• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

মন্ত্রিত্ব হারাচ্ছেন কি উদয়ন গুহ ? মন্ত্রীর বক্তব্যে এমন আশঙ্কার পর রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কোচবিহার: মন্ত্রিত্ব হারাতে পারেন উদয়ন গুহ। ভিড়ে ঠাসা কর্মী সভায় এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বয়ং। সামনেই লোকসভার ভোট। ইতিমধ্যেই আদাজল খেয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি দলের বিরুদ্ধে লড়াইটা যে অত্যন্ত কঠিন তা তিনি হয়তো বুঝে গিয়েছেন।  বিধানসভার ভোট না হওয়া সত্ত্বেও তিনি এবার লোকসভার ভোটে প্রচারে

নিজস্ব সংবাদদাতা, কোচবিহার: মন্ত্রিত্ব হারাতে পারেন উদয়ন গুহ। ভিড়ে ঠাসা কর্মী সভায় এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বয়ং। সামনেই লোকসভার ভোট। ইতিমধ্যেই আদাজল খেয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি দলের বিরুদ্ধে লড়াইটা যে অত্যন্ত কঠিন তা তিনি হয়তো বুঝে গিয়েছেন।  বিধানসভার ভোট না হওয়া সত্ত্বেও তিনি এবার লোকসভার ভোটে প্রচারে নেমে মন্ত্রিত্ব হারানোর আশঙ্কা করছেন। বুধবার দিনহাটার নয়ারহাট গ্রামে এবং শহরের নৃপেন্দ্র নারায়ণ স্মৃতি সদনে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের উপচে পড়া এক সভায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী উদয়ন গুহ তার মন্ত্রিত্ব হারানোর আশঙ্কা প্রকাশ করেন।  কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জগদীশ বর্মা বসুনিয়ার সমর্থনে তিনি ওই দুটি কর্মীসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেন। কর্মী সমর্থকদের সামনে প্রকারন্তরে উদয়ন গুহ বলেন, তাদের দলের প্রার্থী পরাজিত হলে তার মন্ত্রিত্ব থাকবে না।
প্রসঙ্গত তিনি বলেন, জগদীশ বর্মা বসুনিয়া পরাজিত হলে তিনি দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে মুখ দেখাতে পারবেন না। কর্মীদের সামনে উদয়ন গুহ বলেন, দিনহাটার অনেক উন্নয়ন করেছি, আরো উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছি। এই উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। অথচ দিনহাটা শহর এলাকায় ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দশ হাজার ভোটে হেরেছে। এরপর ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে তিনি নিজে ৫৭ ভোটে পরাজিত হয়েছেন। সেইবার শুধু দিনহাটা শহরে তিনি সাড়ে সাত হাজার ভোট কম পেয়েছেন। তার কথায়, তিনি উন্নয়নের কাজ করে যাবেন আর দিনহাটার মানুষ তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন তা চলতে পারেনা। দিনহাটার মানুষ শুধু নেবে আর দেবে না তা হবে না। দিনহাটার উন্নয়নকে অব্যাহত রাখতে তিনি ভোটারদের প্রতি তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীকে রেকর্ড ভোটে জয়ী করার জোরালো আবেদন রাখেন। উদয়ন গুহর মন্ত্রিত্ব হারানোর আশঙ্কা প্রসঙ্গে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
রাজনৈতিক মহল মনে করেন, লোকসভার ভোটে উদয়ন গুহর মন্ত্রিত্ব হারানোর প্রসঙ্গ নেহাতই অমূলক। তিনি হচ্ছেন রাজ্যের মন্ত্রী। আর ভোট হচ্ছে লোকসভার। সে ক্ষেত্রে শাসকদলের প্রার্থী জয় পরাজয়ের উপর উদয়ন গুহর মন্ত্রিত্ব হারানোর প্রসঙ্গ আসে কি করে । এছাড়া, বিগত বিধানসভার উপনির্বাচনে উদয়ন গুহ রেকর্ড মার্জিনে জয়লাভ করেছিলেন দিনহাটা কেন্দ্র থেকে। সুতরাং মন্ত্রিত্ব হারানোর আশঙ্কা তাকে কেন পিছু তারা করছে তা অবশ্য রাজনৈতিক মহল বুঝে উঠতে পারছেন না। বিরোধী রাজনৈতিক দল অবশ্য কটাক্ষ ছুড়ে বলেছেন, বিধানসভা উপ নির্বাচনে উদয়ন গুহ ভয়-ভীতি ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করে ভোট করেছেন।
তাই অনেক ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিলেন। সেই সময় দিনহাটার মানুষ তাদের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করতে পারেননি বলে তারা অভিযোগ‌ও  আনেন। দিনহাটার নৃপেন্দ্র নারায়ন স্মৃতি সদনে বুধবারের এই কর্মী সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ও সিতা‌ই কেন্দ্রের বর্তমান বিধায়ক জগদীশ বর্মা বসুনিয়া, দিনহাটা পৌরসভার চেয়ারম্যান গৌরী শংকর মাহেশ্বরী, ভাইস চেয়ারম্যান সাবির সাহা চৌধুরী, মৌমিতা ভট্টাচার্য, পঙ্কজ মহন্ত প্রমূখ। উক্ত সভায় উদয়ন গুহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের কড়া সমালোচনা করেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত পাঁচ বছরে মন্ত্রী থাকাকালীন নিশীথ প্রামানিক কোন উন্নয়নমূলক কাজ করেনি। সাংসদ তহবিলের ২৫ কোটি টাকা কোথায় কিভাবে খরচ করেছেন তা কেউ জানে না। তাই তিনি এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জগদীশ বর্মা বসুনিয়াকে রেকর্ড ভোটে জয়ী করার জন্য কর্মীদের মানুষের কাছে যাওয়ার কথা বলেন। রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরার কথা‌ও উল্লেখ করেন তিনি। সমাজের সর্বস্তরে বিভিন্ন প্রকারের ভাতা থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক নানা কাজকর্মের বার্তা পৌঁছে দিতে তিনি কর্মীদের উপর নির্দেশ দেন। এমনভাবে প্রচারে ঝড় তুলতে হবে যেন বিরোধী শক্তি মাথা চলে যাওয়াতে না পারে বলে উদয়ন গুহ তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জগদীশ বর্মা বসুনিয়া, তার বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সরকারের ১০০ দিনের টাকা বন্ধ করে দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে আনেন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা অনুপ্রেরণায় রাজ্যে নজির বিহীন উন্নয়নের কথাও তিনি কর্মীদের সামনে তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রীর এ উন্নয়নমূলক কাজকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের জয়ী করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।