লোকসভার সদস্য হিসাবে নরওয়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, নারীর ক্ষমতায়ন এবং লিঙ্গসাম্যের জন্য সক্রিয় রাষ্ট্রপুঞ্জ। তাদের সেই উদ্যোগের পাশে দাঁড়াতে অসলোয় একটি বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করেছে নরওয়ে। সেই কর্মসূচিতেই ডাক পেয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে ২২ নভেম্বর অসলোয় আয়োজিত ওই কর্মসূচিতে তিনি যোগ দেবেন কি না, সে বিষয়ে অবশ্য এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেননি তিনি।
সূত্রের খবর, ওই সম্মেলনের আলোচ্য বিষয় বহুমাত্রিক। বক্তা হিসাবে ওই সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে ভারতের স্থান আলোকিত করতে পারেন অভিষেক। উল্লেখ্য, নরওয়েতে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করার বিভিন্ন পরিকল্পনা ও পদ্ধতি নিয়ে যেমন আলোচনা হবে, পাশাপশি রাজনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে পুরুষদের সঙ্গে মহিলাদের অংশগ্রহণের বিষয়গুলির সঙ্গে নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রগুলিও আলোচনায় উঠে আসবে। অসলোর ওই কর্মসূচিতে বেশ কয়েকজন ভারতীয় সাংসদকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন অভিষেক। গত ২৯ অক্টোবর এই আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে তাঁকে। ওই কর্মসূচিতে যোগ দেবেন নরওয়ে পার্লামেন্টের সদস্য, প্রশাসনের আধিকারিক, শিক্ষাবিদ, শিল্পপতিরা। সেখানে তাঁদের সঙ্গে নারীর ক্ষমতায়ন, অবস্থান, লিঙ্গসাম্য নিয়ে তথ্যের আদানপ্রদান করবেন এ দেশের সাংসদেরা।
প্রসঙ্গত, বঙ্গে নারী ক্ষমতায়ণের অন্যতম পথিকৃৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহিলাদের জন্য একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের মাধ্যমে মহিলা সশক্তিকরণের পাশাপাশি রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও মহিলাদের জায়গা করে দিতে বারংবার সক্রিয় হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। লোকসভায় তৃণমূলের মহিলা প্রতিনিধিত্ব ৩৮%, যা দেশের অন্দরে নজির গড়েছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মঞ্চে সম্মানিত হয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কন্যাশ্রী প্রকল্প। মুখ্যমন্ত্রীর দীক্ষায় দীক্ষিত অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ও সেই পথে হেঁটে নারী ক্ষমতায়নে সর্বদাই গুরুত্ব আরোপ করেন। অতীতে বারংবার মহিলাদের ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন তিনি।
লোকসভা নির্বাচনের প্রচারেও তিনি তুলেছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রসঙ্গ। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তৃণমূল ক্ষমতায় থাকলে রাজ্যের মহিলারা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন না। আরজি কর কাণ্ডের ক্ষেত্রেও তিনি দোষীর চরম শাস্তির দাবি তুলেছেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভা থেকে অভিষেক প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে তখনও সিবিআই গ্রেফতার করেনি। তিনি চেয়েছেন ধর্ষণমুক্ত সমাজ এবং দোষীদের শাস্তি। অভিষেকই তৃণমূলের প্রথম নেতা, যিনি সর্বসমক্ষে মেয়েদের রাতদখলের কর্মসূচিকে সম্মান জানিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চ মাসে ভারত ও নরওয়ের মধ্যে ব্যবসায়িক চুক্তি হয় এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের সেতু গড়ে ওঠে। ফলস্বরূপ বাণিজ্যিক সম্পর্কও মজবুত হবে এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে। এই সফরে বাণিজ্য মহলের সঙ্গেও আলোচনা হবে, যার ফলে ভারতে লগ্নির সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেতে পারে। মূলত ভারতে পুনর্নবীকরণ শক্তির ক্ষেত্রে নরওয়ের লগ্নির সম্ভাবনা রয়েছে।