নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রবিবারও উত্তপ্ত রাজ্যের বিভন্ন এলাকা। দফায় দফায় রাস্তা অবরােধ করে বিক্ষোভ, রেল অবরােধ, ভাঙচুরের দৃশ্য ধরা পড়েছে। এরপরই কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করল রাজ্য সরকার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কালীঘাটের বাড়িতে রবিবার সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই বৈঠকে রাজ্যপুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জ্ঞানবন্ত সিং, মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা, স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন। সাধারণ মানুষের হয়রানি হয় এমন আন্দোলন করা যাবে না। এরপরই পুলিশের পক্ষ থেকে জারি হয় বিজ্ঞপ্তি। সবাইকে সজাগ থাকার অনুরােধ করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক পথে আন্দোলন করুন, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। এমনটাই বলা হয়েছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, রবিবার রাজ্যের ৬ জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করল সরকার। রাজ্য সরকারের আহ্বান সত্ত্বেও বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন জায়গায় জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ অবরােধে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটাচ্ছে। তাই আপাতত রাজ্যের শান্তি এবং সাধারণ মানুষের স্বার্থে বাতিল করা হল ইন্টারনেট পরিষেবা।
মালদা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত ও বসিরহাট মহকুমা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর ও ক্যানিং মহকুমাতেই বন্ধ হল ইন্টারনেট পরিষেবা। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায়। রবিবার মহেশতলা থানার ডাকঘর থেকে ডাকঘরা জালখুরা পর্যন্ত রাস্তা অবরােধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আগুন জ্বালিয়ে অবরােধ চলে বজবজ ট্রাঙ্ক রােডে। আখড়া স্টেশনে হামলা চালাল বিক্ষোভকারীরা। স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে ভাজুর, টিকিট ঘরে লুঠপাট চালায় দুষ্কৃতীরা। এমনকি অগ্নিসংযােগও করা হয়। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
অপরদিকে, হাওড়া-খড়গপুর শাখায় প্রায় ১১ ঘণ্টা ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকার পর ফের চালু হয় পরিষেবা। শনিবার রাত দশটা নাগাদ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়। পরিষেবা স্বাভাবিক হলেও বাতিল করা হয়েছে একাধিক ট্রেন। পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী এক আবেদনে জানিয়েছেন, শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখুন। কোনও ভাবেই রেলের সম্পত্তি ধ্বংস করবেন না।
নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ থেকে দুন্ধুমার কাণ্ড বাঁধল গলির ডানকুনিতে। বিক্ষোভকারীরা গুড়িয়ে দিল বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে। ডানকুনিতে ফুরফুরা শরিফের পরীজাদা আব্বাস সিদ্দিকির সভাতেও ব্যাপক গণ্ডগােলের ঘটনা ঘটল। এক যুবককে মারধরের খবর পেয়ে পুলিশ উদ্ধার করতে গেলে বিক্ষোভকারীদের তাণ্ডবে চুরমার হয়ে গেল পুলিশের গাড়ি। অপরদিকে, ডানকুনি রেল ওভারব্রিজের নীচে বিজেপির অফিসে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।