• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

আন্তর্জাতিক মূকাভিনয় উৎসব

গতকাল চব্বিশ মার্চ থেকে পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে (ইজেডসিসি)তে সাতদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক মূকাভিনয় উৎসবের আয়োজন করেছে ন্যাশনাল মাইম ইন্সটিউট

আন্তর্জাতিক মূকাভিনয় উৎসব

না বলা বাণীকে অভিব্যক্তির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমই মূকাভিনয়। এই মূকাভিনয় সভ্যতার এক আদি ভাব বিনিময়ের মাধ্যম। এক সময় মানুষ এখন শব্দের ব্যবহার জানত না, হাত পা নেড়ে অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে মনের কথা ফুটিয়ে তুলত। তারপর সভ্যতার কলতান যত বেড়েছে, মূকাভিনয় মাধ্যমটি দৈনন্দিনতা থেকে বিদায় নিয়েছে। এখন মূকাভিনয় হয়ে উঠেছে একটা শিল্প মাধ্যম। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই এই শিল্পের চর্চা হয়ে থাকে।

গতকাল চব্বিশ মার্চ থেকে পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে (ইজেডসিসি)তে সাতদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক মূকাভিনয় উৎসবের আয়োজন করেছে ন্যাশনাল মাইম ইন্সটিউট । যা শেষ হবে আগামী তিরিশ মার্চ। এই উৎসবে অংশ নিতে আসছেন তুর্কি, জার্মানি, মেক্সিকো, শ্রীলঙ্কা, স্পেনের মূকাভিনয় শিল্পীরা । প্রতিবেশি বাংলাদেশের শিল্পীরাও থাকবেন। এছাড়া দেখা যাবে মণিপুর, কেরালা, রাজস্থান, অসম , মহারাষ্ট্র , দিল্লির মূকাভিনয় শিল্পীদের কাজ।

মাইম বা মূকাভিনয় এমন একটা শিল্পমাধ্যম যার শক্তি অপরিসীম। কেননা দেশে বিদেশের ভাষাগত অন্তরায় এই শিল্পে থাকে না। তাই সব দেশের শিল্পীরা এক হয়ে যেতে পারেন এই মাইম শিল্পের মাধ্যমে। এক দেশের মানুষের ভাবনা , কল্পনা সহজেই অন্য দেশের মানুষের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে উপস্থাপনার মাধ্যমে। আন্তর্জাতিক মাইন উৎসবের মাধ্যমে এই বার্তাটিই পৌঁছনো যাবে।

উৎসবের অঙ্গ হিসাবে দেশি বিদেশি মাইম শিল্পীদের তত্ত্বাবধানে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে বিনা পারিশ্রমিকে। উৎসব চলাকালীন ইজেডসিসির আঙ্গিনায় বিকেল পাঁচটা থেকে ছটা পর্যন্ত চলবে মূকাভিনয়, পুতুল নাচ ও আরও নানান ধরনের উপস্থাপনা। উদ্বোধনী দিনে একটি শোভাযাত্রার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। যে শোভাযাত্রা ন্যাশনাল মাইম ইনস্টিউট থেকে শুরু হয় উৎসব আঙ্গিনায় শেষ হয়। বড় বড় ড্রাগন পাপেট , ছৌ, রণপা ইত্যাদি নিয়ে শোভাযাত্রাটি বর্ণময় হয়ে ওঠে। সঙ্গে ঢাকের তাল মাতিয়ে দিয়েছিল সবাইকে।

আয়োজক সংস্থা ইন্ডিয়ান মাইম থিয়েটারের প্রতিষ্ঠা হয় উনিশশো ছিয়াত্তর সালে। বিয়াল্লিশ বছর ধরে এই সংস্থা কাজ করে চলেছে। প্রতিষ্ঠাতা পদ্মশ্রী নিরঞ্জন গোস্বামী আজও লড়াই করে চলেছেন এই মাইম শিল্পের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার জন্য। তাঁর মূকাভিনয় পদ্ধতিতে অভিনবত্বের ছোঁয়া । নতুন প্রজন্ম এই মাইম শিল্পের এগিয়ে আসুক, এটাই চান তিনি। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও নিরঞ্জন গোস্বামী পরিচিত নাম। তাঁর আশা এই শহরের শিল্পানুরাগী মানুষ এই উৎসবকে সার্বিকভাবে সফল করে তুলবে।