মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্ততা বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে। দিল্লিতে কর্মসূচি শেষ করে বাংলায় বিনিয়োগ টানতে পাড়ি দিয়েছিলেন মুম্বইয়ে। রাজ্যে শিল্প সম্ভাবনার বিষয়টি তুলে ধরে বাংলায় লগ্নি আনার জন্য মুম্বইয়ে প্রথম সারির শিল্প সংস্থার কর্ণধারদের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি যে আন্তরিকভাবে রাজ্যে শিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে, তার জন্য তার তৎপরতা বিভিন্ন সময়ে। ছিল চোখে পড়ার মতো। তৃতীয়বার রাজ্যে প্রশাসনিক ক্ষমতায় এসে কৃষির পাশাপাশি রাজ্যে শিল্প সম্প্রসারণ ঘটাতে মরিয়া প্রয়াস লক্ষ্য করা যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ের কর্মসূচি শেষ করে সোজা নবান্নে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে আদানি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান গৌতম আদানির সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে উদ্বোধন করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দিল্লিতে থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুম্বইতে যাবেন রাজ্যে বিনিয়োগের বার্তা নিয়ে ঘটাই গিয়েছিল কিন্তু একেবারে আদানি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান গৌতম আদানি নবান্নে এসে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন, তা টের পাওয়া যায়নি।
সব মিলিয়ে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আগে গৌতম আদানির সঙ্গে মমতার বৈঠক আগামী দিনে রাজ্যে শিল্প সম্ভাবনাকে ত্বরান্বিত করবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রধানমন্ত্রী মোদি ঘনিষ্ঠ এই শিল্পপতি বাংলাকে আগামী দিনে তাঁর শিল্প সম্প্রসারণের ঠিকানা হিসেবে ৫ বছে নেন কিনা, এখন সেটাই দেখার।
বুধবার মুম্বইতে মেধা পাটেকরের প্রশ্নের জবাবে মমতা বলেছিলেন, শিল্প এবং কর্মসংস্থানের জন্য আমাদের আদানি-আম্বানিও চাই। আবার আমাদের কৃষকদেরও পাশে থাকতে হবে। সেই কথার ঘণ্টার মধ্যে এদিন নরন্নে গৌতম আদানির সঙ্গে বৈঠক করলেন মমতা।
এদিন বিকেল নাগাদ নবান্নে পৌঁছন আদানি। মমতার সঙ্গে অদানির বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। এই বৈঠক করতে প্রশান্ত কিশোরের ভূমিকা কতটা রয়েছে, তা নিয়েও গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
এ রাজ্যের হলদিয়াতে আদানিে বিনিয়োগ রয়েছে। আগামী দিনে আরও বড়সড় লগ্নি নিয়ে আদানিরা যাতে এ রাজ্যকে তাদের ঠিকানা হিসেবে বেছে নেন, সেই বার্তাই যে মমতা দিলেন, তা বলাই বাহুল্য।
উল্লেখ্য, প্রথম ইউপিএ জমানায় যখন বামেরা কেন্দ্রের সমর্থক ছিল, সেই সময় দিল্লিতে সিপিএমের সদর দফতর এ কে গোপালন ভবনে প্রকাশ কারাতের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন মুকেশ আম্বানি। তবে সেই বৈঠকটি হয়েছিল গোপনে।
তবে গৌতম আদানি সে পথে না হেঁটে প্রকাশ্যে নবান্নে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এদিনের বৈঠকের পর গৌতম আদানি ট্যুইটে লেখেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আনন্দিত। পশ্চিমবঙ্গে বিপুল বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আমি ২০২২-এর এপ্রিলে বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে (বিজিবিএস) যোগদানের জন্য উন্মুখ হয়ে রয়েছি। মমতার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধন করতে রাজি হয়েছেন।
একাধিক শিল্পকর্তা মুম্বইয়ের সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বাংলায় বিনিয়োগ করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সব মিলিয়ে বাংলাকে ঘিরে নতুন করে শিল্পপতিরা বিনি উৎসাহ খুঁজে পাচ্ছেন। এখন দেখার, আগামীতে মমতা হাত ধরে শিল্পপতিদের ঠিকানা পশ্চিমবঙ্গ হয় কিনা?