• facebook
  • twitter
Saturday, 11 January, 2025

কর্মীর রহস্যমৃত্যু ঘিরে খড়গপুর আইআইটিতে চাঞ্চল্য

পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাকিরের ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট ও অডিও বার্তা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

শুক্রবার সকালে খড়গপুর আইআইটি ক্যাম্পাসের জি টাইপ কোয়াটার থেকে এক কর্মীর গলায় ফাঁস দেওয়া দেহ উদ্ধার হয়। মৃতের নাম সাকির আলী মোল্লা (২৯)। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানার সামালী গ্রামে। সাকিরের পরিবার তাকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তারা এই মৃত্যুর সিআইডি তদন্ত দাবি করেছেন। সাকির আইআইটির রসায়ন বিভাগের জুনিয়র ল্যাব এসিস্ট্যান্ট ছিলেন। কোয়াটারের দরজা জানালা খোলা ছিল। প্রতিবেশীরা ঘরের ভেতর সাকিরের ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখে হবে বলে কর্তৃপক্ষকে খবর দেন। কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দেহ নামিয়ে আনে। আইআইটি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

মৃত সাকিরের কাকা সাইদুল আলী মোল্লা বলেন, কাল রাত নটার সময় ফোনে সাকিরের সঙ্গে তার বাবা মায়ের কথা হয়। আজ সকাল সাড়ে ছটা নাগাদ কলেজ থেকে ফোন যায় ছেলে আত্মহত্যা করেছে। সাকির দু’বছর হল আইআইটিতে কাজ করছে। আমাদের ছেলে আত্মহত্যা করার মতো ছেলে নয়। আমাদের মনে হয় ওকে বাইরে কোথাও মেরে, ঘরে এনে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই তদন্ত করে প্রকৃত সত্য সামনে আসুক। দোষীরা শাস্তি পাক।

সাকিরের বোন ফতিমা বিবি বলেন, গতকাল রাত নটার সময় ফোন করেছিল। জিজ্ঞেস করলাম, কি করছিস? ও বলল, ল্যাবে কাজ করছি। রাতের খাবার কখন খাবি বলতে ও উত্তর দিল, রুটি অর্ডার করেছি। এলে খাবো। বাবা মা কেমন আছে, জিজ্ঞেস করল। আরো জিজ্ঞেস করল, তোর ছেলে মেয়ে ভালো আছে? তোরা কখন খাবি? আমার একটাই প্রশ্ন দরজা জানালা খোলা রেখে কেউ আত্মহত্যা করে। ওকে খুন করা হয়েছে।

সাকিরের আরেক কাকা শাজাহান মোল্লা বলেন, গতকাল রাতে বাবা মা বোনের সঙ্গে ওর কথা হয়। দুদিনের ছুটিতে সকালে বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। আমাদের ছেলে আত্মহত্যা করার ছেলে নয়। সকালে খবর পেয়েই আমরা সবাই খড়াপুরে ছুটে এসেছি। ওকে খুন করা হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে সিআইডি তদন্ত দাবি করছি। আইআইটি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সাকিরের অকাল মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। ছাত্র-ছাত্রী এবং কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য কর্তৃপক্ষ দায়বদ্ধ।

পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাকিরের ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট ও অডিও বার্তা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশ সেই নোট এবং অডিও বার্তায় কি রয়েছে তা প্রকাশ্যে জানায়নি। সাকিরের পরিবারের সন্দেহের কারণ দরজা জানালা খোলা অবস্থায় থাকা। পরিবারের বক্তব্য, নিজের ঘরেও সাকির দরজা বন্ধ করে শুতো। সেই ব্যক্তি দরজা খোলা রেখে শোবে কেন? আইআইটির আগে কলকাতার একটি কলেজে কাজ করতো সাকির। খড়গপুর আইআইটিতে রহস্যজনক মৃত্যুর তালিকা ক্রমশই দীর্ঘতর হচ্ছে। ময়না তদন্ত খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে হয়নি। মৃতদেহ মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।