নিজস্ব প্রতিনিধি— মঙ্গলবার দিল্লি থেকে ফোন এসেছিল রাজনীতির ময়দানে নবাগত তথা বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের কাছে৷ ফোনের ওপারে ছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ রাজনীতিতে আনকোরা সন্দেশখালির নির্যাতিতা রেখাকে ‘শক্তি স্বরূপা’ বলেও সম্বোধন করেন তিনি৷ সেই মঙ্গলবারেই ফোন এলো আরও এক আনকোরা প্রার্থীর কাছে, তিনি কৃষ্ণনগরের ‘রাজমাতা’ অমৃতা রায়৷ গত রবিবার লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি৷ সেই তালিকায় উঠে এসেছে রেখা পাত্র, অমৃতা রায়ের মতো নবাগতদের নাম৷ তালিকায় রয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও৷ তবে তিনি ইতিমধ্যেই নিজেকে খানিকটা ধাতস্থ করে নিয়েছেন রাজনীতির সঙ্গে৷ কিন্ত্ত বাকি দু’জন রাজনীতির ময়দানে একেবারেই নতুন৷ তাই তাঁদের মনোবল বাড়িয়ে তুলতেই প্রধানমন্ত্রীর মোবাইল বার্তা৷
মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরের ‘রাজমাতা’ অমৃতা রায়ের কাছে ফোন আসে প্রধানমন্ত্রীর৷ মিনিট পাঁচেক কথা হয় তাঁদের মধ্যে৷ এই অল্প সময়ের কথোপকথনের মধ্যেই ছিল বাংলার দুর্নীতি থেকে শুরু করে নবাগতদের ভোট প্রচারের প্রসঙ্গ৷ এদিন ফোনে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের গুরুত্বও ‘রানিমা’কে বুঝিয়ে দেন নরেন্দ্র মোদি৷ পাশাপাশি, তাঁদের বার্তালাপের মধ্যে মহুয়া মৈত্রর প্রসঙ্গও উঠে আসে বলে দাবি সূত্রের৷
ফোনের শুরুতে দু’জনের মধ্যে প্রথমে কুশল বিনিময় হয়৷ তার পরে প্রধানমন্ত্রী ‘রাজ’ প্রার্থীর কাছে জানতে চান তাঁর প্রচারের বিষয়ে৷ একই সঙ্গে তিনি যেন নিজেকে অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বলে না ভাবেন, সেই পরামর্শ দেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ প্রধানমন্ত্রীর মুখে উঠে আসে কৃষ্ণনগর রাজ পরিবারের ঐতিহ্যের কথা৷
প্রসঙ্গত, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দাবি করেছিলেন, ‘‘ঔপনিবেশিক ভারতে ব্রিটিশদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল কৃষ্ণনগর রাজ পরিবার৷ নবাব সিরাজের সঙ্গে ইংরেজদের লড়াইয়ে, ইংরেজদের সাহায্য করেছিলেন তারা’’৷ যা নিয়ে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের নবম কুলবধূ অমৃতা রায়ের অনুযোগ, রাজ বাড়ির ইতিহাসের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে৷ তার পরেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনি অবশ্যই সকলকে জানাবেন আমার সঙ্গে আপনার কথোপকথনের বিষয়টি’’৷ একই সঙ্গে বাংলায় ইডির বাজেয়াপ্ত করা তিন হাজার কোটি টাকা বাংলার গরিব মানুষদের ফিরিয়ে দিতে আইনি পরামর্শ নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী৷ সে কথাও সকলের কাছে তুলে ধরার জন্য রানিমার কাছে আর্জি রাখেন নরেন্দ্র মোদি৷
তবে রাজনীতির ময়দানে আনকোরা অমৃতা রায়ের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বার্তালাপকে আমল দিতে নারাজ তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া৷ তাঁর কথায়, ‘‘আসল লড়াই হবে ময়দানে৷ কে কাকে ফোন করল তাতে আমার কী এসে যায়!’’ প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনেও তাঁকেই কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের প্রার্থী করেছিল তৃণমূল৷ সেই নির্বাচনে বিযজেপির প্রার্থী কল্যাণ চৌবেকে ৭৫ হাজারেরও বেশি ভোটে হারিয়ে সাংসদ হন মহুয়া৷ তবে ক্যাশ ফর কোয়েশ্চেন বির্তকে সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যায় মহুয়ার৷ তবে তার পরেও আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মহুয়াতেই আস্থা রাখছে তৃণমূল৷