ট্যাব দুর্নীতি নিয়ে জোরকদমে তদন্ত চালাচ্ছে কলকাতা পুলিশ। কলকাতায় কাউন্সিলর হত্যার ষড়যন্ত্র নিয়ে সরগরম রাজনীতি। রাজ্যের ছয় বিধানসভার উপনির্বাচনের ফলাফল দোরগোড়ায়। এই আবহে নবান্নে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা মুখোপাধ্যায়। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের নেগেটিভ খবর নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন স্পষ্ট করে দেন, এই ধরনের নেগেটিভ খবর যদি সংবাদমাধ্যমগুলি লাগাতার করতে থাকেন, তাহলে সেই সেই সংবাদপত্রকে তিনি আর ডাকবেন না। কারণ তিনি মন খুলে কথা বলতে পারবেন না।
ট্যাব দুর্নীতি থেকে শিক্ষা জালিয়াতি রুখতে ‘কন্যাশ্রী’ নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশিকা দেন মুখ্যমন্ত্রী সেই সঙ্গে কড়া বার্তা দেন পুলিশ-প্রশাসনকে। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে বলতে গিয়ে মমতা বলেন, রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডির সর্বস্তরে রদবদল করা হবে। একই সঙ্গে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স এবং ‘অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো’-কে আরও শক্তিশালী করারও নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, নিচুতলার পুলিশের একাংশের গাফিলতির কথা। এমনকি, নিচুতলার সরকারি আধিকারিক ও কর্মীদের একাংশের উপরেও অসন্তুষ্ট মমতা।
রাজ্যে কয়লা এবং বালি পাচারের অভিযোগ নতুন নয়। পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল, রানিগঞ্জ এলাকায় মাঝেমধ্যেই বেআইনিভাবে কয়লা তোলা এবং পাচারের অভিযোগ উঠে আসে। এই নিয়ে বিরোধী দল বারবার নিশানা করেছে সরকারকে। এই অভিযোগ একেবারেই বরদাস্ত করবেন না বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। রাজনীতির রং না দেখে পদক্ষেপ করার কথা বলেছেন তিনি। তবে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীর অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে এই অবৈধ কারবারে সাহায্য করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশের নিচুতলার একাংশ।
রাজ্যের আলুর দাম নিয়েও কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। বাংলায় আলুর দাম বাড়িয়ে অন্য জায়গা থেকে মুনাফা লুটবে, আর আমি চাষিদের জন্য ইনসিওরেন্সের ব্যবস্থা করব, দুটো জিনিস একসঙ্গে চলতে পারে না স্পষ্ট জানান তিনি। রাজ্যে আলু ও পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে দ্রুত টাস্ক ফোর্সের মিটিং ডাকারও নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। অবিলম্বে সীমান্ত সিল করার নির্দেশও দেন তিনি।
পুজোর আগে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র দাপটে বাংলায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। প্রচুর ফসল নষ্ট হয়েছে, কৃষিজমির ক্ষতি হয়েছে। সেসব সমীক্ষা করে দেখে হিসেব অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কাজের মধ্যে এবার কৃষকবন্ধু প্রকল্পে রেকর্ড অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার নবান্নের তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, রাজ্যের মোট এক কোটি নয় লক্ষ কৃষককে দেওয়া হবে দু’হাজার নয়শ তেতাল্লিশ কোটি টাকা। শুক্রবার থেকে এই অর্থ কৃষকদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এরই সঙ্গে আরও একটি খুশির খবর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের আরও ৫ লক্ষ মহিলাকে লক্ষ্মীর ভান্ডারের প্রকল্পের আওতায় আনা হল। ডিসেম্বর মাস থেকেই প্রকল্পের টাকা পাবেন তাঁরা। প্রশাসন সূত্রের খবর, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে এতদিন আটচল্লিশ হাজার চারশ নব্বই কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে, এবার থেকে সেটা বেড়ে দাঁড়াল প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা।
এরপর পাঁচের পৃষ্ঠায়