হরিদেবপুরে জমা জলে বিদ্যুৎস্পষ্ট হয়ে শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা রাজ্য মন্ত্রিসভার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ফিরহাদ হাকিম।
এ প্রসঙ্গে তিনি এদিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন ‘পুরসভার কমিশনারকে বলেছি, পুরো ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে। কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা জানার জন্য তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।’
উল্লেখ্য, রবিবার বিকেলে হরিদেবপুরের ৪১ পল্লি ক্লাবের কাছে জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নীতীশ যাদব নামে ১২ বছরের এক নাবালকের মৃত্যু হয়।
উল্লেখ্য, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে এমনই পরিণতি হয়েছিল দমদমের বান্ধবনগরের ক্লাস সিক্সের ছাত্রী অনুষ্কা ও পাখির।
প্রতিদিনের মতো বিকেলে টিউশন পড়তে বেরিয়েছিল তারা। বান্ধব্লগরের চারমাথার মোড়ে হাঁটুজল পেরিয়ে হাঁটছিল দুই বন্ধু। উল্টো দিক থেকে আসছিল গাড়ি।
একপাশে সরতে গিয়ে ড্রেনে পড়ে যায় পাখি। সেখান থেকে উঠতে গিয়ে হাত দিয়ে ধরে ফেলে একটি ল্যাম্পপোস্ট। পাখিকে বাঁচাতে গিয়ে অনুষ্কাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।
এদিকে রবিবার বিকেলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল নীতীশ। হাতে ছোট একটা প্লাস্টিক ছিল তার।
কিছু কেনার জন্য বেরিয়েছিল সে। জলভর্তি রাস্তায় হাঁটার সময় টাল সামলাতে না পেরে রাস্তার ধারের একটি ল্যাম্পপোস্ট ধরে ফেলে সে।
ল্যাম্পপোস্ট ছোঁয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তার মৃত্যু হয়। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ভয়ে ছেলেটিকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যায়নি কেউ। এই নাবালকের মৃত্যুর ঘটনায় রীতিমতো ব্যথিত মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
এদিন তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। কী করে এটা হল, তা জানতে হবে। পরিবার অভিযোগ করেছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বর্ষার আগে যাতে সমস্ত বিদ্যুতের খুঁটি ঠিকঠাক থাকে, তা খতিয়ে দেখা হয়েছিল, তা সত্ত্বেও কেন দুর্ঘটনা ঘটল, সেটা জানার জন্য কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্ঘটনার কিছু পরে সিইএসসি’র লোকজন ঘটনাস্থলে এসে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে নীতীশকেউদ্ধার করে বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত নীতীশ যাদব আদতে বিহারের বাসিন্দা।
পুরসভা থেকে সমস্ত ব্যবস্থা করা হচ্ছে, বিহারে তার পরিবারের কাছে দেহ পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য, এমনটাই জানিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
শোকাতুর পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘বাড়িতে যাঁদের শিশু আছে, তাঁরাই জানে কতটা ক্ষতি হল। যাই হোক, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরিবারের পাশে আমি আছি, যা সাহায্য লাগে আমি করব।’