• facebook
  • twitter
Thursday, 19 December, 2024

‘আম্বেদকর মন্তব্যে আমি স্তম্ভিত’, বড়দিনের উৎসবের সূচনায় শাহকে আক্রমণ মমতার

বড়দিনের ছুটি বাতিল নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ

নিজস্ব চিত্র

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাবাসাহেব আম্বেদকর প্রসঙ্গে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বিগত দু’দিন ধরেই উত্তাল রাজপথ থেকে সংসদ। বুধবারই শাহের মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় শাহের মন্তব্যকে বিজেপির ‘দলিত বিরোধী মনোভাব’ বলেও ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে অ্যালেন পার্কে বড়দিন উৎসবের সূচনাতেও মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে ফের উঠে এল আম্বেদকর প্রসঙ্গ।

তিনি জানান, আম্বেদকরকে নিয়ে যে মন্তব্য করা হয়েছে, তাতে তিনি স্তম্ভিত! শুধু তা-ই নয়, বড়দিনের ছুটি বাতিল নিয়েও কেন্দ্র সরকারকে বিধেঁছেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতার সংস্কৃতি এবং সম্প্রীতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কলকাতা হলো ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। বড়দিনের অর্থ ভালোবাসা, আনন্দ, শান্তি, অনুরাগ, ঐক্যবদ্ধতা এবং প্রার্থনা। সকল সম্প্রদায়ের মানুষ আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, তাঁদের ছাড়া আমরা অচল। সম্প্রীতির বার্তাবাহক বাবাসাহেব আম্বেদকর সম্পর্কিত মন্তব্যে আমি স্তম্ভিত।’

শাহের মন্তব্যে শুধু ‘দলিতদের অপমান’ই দেখছেন না তৃণমূল-সুপ্রিমো মমতা, ‘বাংলারও অপমান’ হয়েছে বলেও তিনি তুলে ধরতে চাইছেন। এখানেই শেষ নয়, বাংলার সংস্কৃতির প্রসঙ্গ তুলে কেন্দ্রকে তুলোধনা করেছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।

উল্লেখ্য, ২৫ ডিসেম্বর ‘ন্যাশনাল হলিডে’ হিসেবেই ঘোষিত ছিল। তবে কেন্দ্র সরকার সেই ছুটি বাতিল করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায়, ‘জাতীয় ছুটি সম্পূর্ণ বাতিল করেছে কেন্দ্র। কিন্তু আমরা তা কখনও করব না। আমরা চাই ২৫ ডিসেম্বর সকল ধর্মাবলম্বী মানুষ এই উৎসবের আনন্দে মেতে উঠুক এবং চার্চে গিয়ে প্রার্থনার মাধ্যমে ভগবান আরাধনায় শামিল হোক।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘আমরা সব ধর্মকেই ভালোবাসি, সব উৎসব আমাদের। ২৪ ডিসেম্বরের রাতের প্রার্থনায় আমিও যোগদান করি এবং এর জন্য আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি।’

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাজ্যসভায় সংবিধান নিয়ে আলোচনা চলাকালীন অমিত শাহ বিরোধীদের কটাক্ষ করে মন্তব্য করেন, ‘এখন একটা ফ্যাশন হয়েছে বারবার আম্বেদকর আম্বেদকর নাম নেওয়া। এতবার ভগবানের নাম নিলে স্বর্গবাস হয়ে যেত!’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরই হই হট্টগোল শুরু হয়ে যায় রাজ্যসভায়। শাহের এই মন্তব্যের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদের দুই কক্ষ থেকে রাজপথ। শাহের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলার শাসকদল।

এমনকী এই সিদ্ধান্তে আম্বেদকরের পৌত্র তথা প্রাক্তন সাংসদ প্রকাশ আম্বেদকর ধন্যবাদও জ্ঞাপন করেছেন তৃণমূলকে। আম্বেদকর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘অমিত শাহ আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন, তাও আবার গণতন্ত্রের মন্দিরে বসেই। এই মন্তব্য শুধু আম্বেদকরকেই নয়, তাঁকে যাঁরা মেনে চলেন, তাঁর ভাবধারায় যাঁরা চালিত হন, তাঁদেরকেও অপমান করেছেন।’