সিভিকের মানবিক মুখ, রক্তাক্ত বাইক আরোহীকে কাঁধে তুলে ৫০০ মিটার দৌড়, প্রাণে বাঁচলেন আহত ব্যক্তি

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ঘটে যাওয়া নির্মম ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে যখন পুলিশ বনাম মানুষের এক অদ্ভূত বাইনারির খেলা চলছে, তখনই কলকাতা সাক্ষী থাকল পুলিশের মানবিকতারও। এমনিতেও, কলকাতা পুলিশ তাঁদের সমাজমাধ্যমের পাতা থেকে সবসময়েই পুলিশকর্মীদের নিরলস নিভৃতে কাজ করে যাওয়ার নানা ঘটনা বাকিদের সঙ্গে ভাগ করে নেন। আজকেও জনগণ সাক্ষী থাকল এমনই এক ঘটনার, যা কলকাতা পুলিশ নিজেদের ফেসবুক পেজের দেওয়ালে তুলে ধরে।

গত শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ মিত্র লেনের বাসিন্দা জনৈক ফারহান আলম বাইক দুর্ঘটনার শিকার হন। পিছনে আরেকজন আরোহী নিয়ে তিনি বাইকে চড়ে যাচ্ছিলেন। বৃষ্টিভেজা পিচের রাস্তায় হঠাৎই বাইকের চাকা পিছলে যায় তাঁর। দুর্ঘটনাটি ঘটে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিছনের ফটকের কাছে। বাইক সমেত ভূপতিত হন তিনি, প্রবল চোট পান মাথায়।

দুর্ঘটনার খবর পেয়েই দ্রুত অকুস্থলে পৌঁছন জোড়াসাঁকো থানার সিভিক ভলান্টিয়ার আলি নওয়াজ। রক্তে ভেসে যাওয়া ফারহানকে দেখে তিনি বুঝতে পারেন, অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করলে তাঁকে আর বাঁচানো সম্ভব হবে না। সঙ্গে সঙ্গে দুর্দান্ত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেন তিনি। আহত ফারহানকে কাঁধে তুলে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে দৌড় দেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের উদ্দেশে। ৫০০ মিটার তাঁকে কাঁধে করে বয়ে নিয়ে গিয়ে তিনি হাসপাতালের এমার্জেন্সি ওয়ার্ডে ভর্তি করান, শুরু হয় চিকিৎসা। তাঁর তৎপরতা, প্রত্যুৎপন্নমতিত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন চিকিৎসকরা। তাঁর উপস্থিত বুদ্ধির জন্যই প্রাণ ফিরে পেতে চলেছেন মৃত্যুমুখী ফারহান।


সাদা বা খাকি উর্দির তলায় হৃদয়ও যে থাকে, চামড়ার নিচে রক্তটাও যে লাল – এহেন ঘটনা বার বার সেটাই প্রমাণ করে দেয়। পুলিশ হলেও, দিনের শেষে তো তাঁরা মানুষই! এভাবেই বার বার জিতে যায় মানবতা।