নিরাপত্তা বাড়াতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের

আরজি কাণ্ডের পর জুনিয়র চিকিৎসকেরা কাজে ফিরলেও নিরাপত্তার দাবিতে এখনও সুর চড়াচ্ছেন তাঁরা। তাই জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনেই এবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হল। ইতিমধ্যেই বাড়ানো হয়েছে পুলিশের সংখ্যা। সিভিক ভলান্টিয়ারদের আরও সজাগ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টিও সামনে আনা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আপোস করা হবে না। এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে আবেদনও জানিয়েছেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ।

জুনিয়ার ডাক্তারদের দাবি মেনে সম্প্রতিই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। কয়েকদিন আগেই এক নার্সকে চূড়ান্ত হেনস্থার শিকার হতে হয়। এরপর থেকে আবারও সোচ্চার হন জুনিয়ার ডাক্তাররা। বৈঠকে বসেন হাসপাতালের আধিকারিকরা। আর ওই বৈঠকে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ঘোষণা হয়।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এরই মধ্যে কলেজ ও হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল।

সেই আবেদন মেনে সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশ কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি মেনে নেওয়া হয়। পুলিশ ক্যাম্পে দু’জন করে লেডি কনস্টেবল ও কনস্টেবলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। একজন সাব ইন্সপেক্টর পদের পুলিশ অফিসার আগের মতই সব দায়িত্ব সামলাবেন। এছাড়াও মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা ৮৬। রয়েছেন ৪৬ জন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীও। তারপরেও নিরাপত্তা আরও কড়া করতে কর্তৃপক্ষ চাইছে, আরও শতাধিক নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করা হোক। যাতে ভবিষ্যতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আর কোনও অভিযোগ না ওঠে।


ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য ভবনে অতিরিক্ত ১১০ জন নিরাপত্তারক্ষী চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। কোয়ার্টার থেকে হাসপাতালে যাওয়ার সময় নার্সদের নিরাপত্তা জোরদার করতে পুলিশ বুথ করা হবে বলে ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল রোডে ওই পুলিশ বুথ হবে নার্স কোয়ার্টারের সামনে। আপাতত এজেন্সি থেকে আসা নিরাপত্তাকর্মীদের বিশেষ জ্যাকেট পরে কাজ করতে হবে। পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি বহিরাগতের আনাগোনা ঠেকাতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হাজিরার ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিকও চালু করা হয়েছে। কোনওভাবেই যাতে আরজি করের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় এবং মহিলা কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।