আজ শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক

প্রতিকি ছবি (File Photo: Indrajit Roy/IANS)

আজ থেকে শুরু হতে চলেছে ২০২০-এর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। ২৭ মার্চ পরীক্ষা শেষ হবে বলে পর্ষদের তরফে জানানাে হয়েছে। বুধবার পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে জানানাে হয়েছে, এবছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মােট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৭ লক্ষ ৯০ হাজার। যার মধ্যে ছাত্রদের থেকে ছাত্রীদের সংখ্যা প্রায় ৭২ হাজার বেশি। রাজ্যের ২৫’টি জেলার মধ্যে ২৪’টিতেই ছাত্র পরীক্ষার্থীর থেকে ছাত্রী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। এবছর মােট পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা হল ৭৩৪’টি। মােট পরীক্ষা ভেনুর সংখ্যা ২১৪৫’টি। এছাড়াও এবারের মােট একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী মিলিয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা মােট ১৯ লক্ষ। এবং প্র্যাকটিক্যাল এবং থিউরিটিক্যাল মিলিয়ে মােট প্রশ্নপত্রের সংখ্যা হল ১২৪’টি। 

এদিন পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি ড. মহুয়া দাস সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, ‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য রাজ্য সরকার এবং প্রশাসনের তরফে যাবতীয় ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই পর্ষদের তরফ থেকে সমস্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য এডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদি নথিপত্র বিতরণ কড়া হয়ে গেছে।

এছাড়াও স্পট কারেকশনের জন্য অর্থাৎ কারাের কিছু ভুল থাকলে সেটা সঙ্গে সঙ্গে ঠিক করার জন্য চারটে অঞ্চলিক কার্যালয় খােলা হয়েছিল, যেটির কাজও শেষ হয়েছে। কোনও স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীর কোনও স্কুলে সিট পড়েছে তা ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়ে সমস্ত স্কুলগুলােকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং ইতিমধ্যেই সংসদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে পুর্ণাঙ্গ অ্যালটমেন্ট চার্ট তুলে ধরা হয়েছে। যদিও ছাত্র-ছাত্রীরা ইতিমধ্যেই জেনে গেছে, তবুও তাদের লাস্ট মিনিট ভেরিফিকেশন করতে বলা হচ্ছে ওই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। বিগত বছরের মতাে এবছরও আমরা প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করার জন্য প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের ওপর কম্পিউটার জেনারেটেড বারকোড’এর সাহায্যে ট্র্যাকিং’এর ব্যবস্থা থাকছে।’ 


এবারে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার নতুন এক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এই পদক্ষেপ অনুযায়ী এবার প্রতিটি পরীক্ষা হলে ৩ জন ইনভিজিলেটর থাকবেন। এর মধ্যে একজন থাকবেন চিফ ইনভিজিলেটর যাকে বিশেষ আই কার্ডের মাধ্যমে সনাক্ত করা যাবে ও অন্য একজন হলে স্পেশাল মােবাইল ইনভিজিলেটর যার প্রধান দায়িত্ব হবে পরীক্ষা হলে কেউ মােবাইল নিয়ে প্রবেশ করেছে কিনা তাদের তদারকি করা। এবং তৃতীয় জন অন্যান্য কাজগুলি করবেন।

তবে প্রতিটি কক্ষের মূল দায়িত্ব চিফ ইনভিজিলেটরের। ভ্যেনু সুপারভাইজার, সেন্টার ইনচার্জ ও সেন্টার সেক্রেটারি ছাড়া অন্য কারও মােবাইল নিয়ে ভ্যেনুতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরীক্ষা হলে মােবাইল নেই এটা নিশ্চিত করার পরই পরীক্ষা শুরু করা যাবে। এর জন্য প্রয়ােজন পড়লে কোনও বিশেষ অঙ্গ দানশীল পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে মােবাইল শনাক্তকরণের জন্য মেটাল ডিটেক্টর’এর ব্যবস্থা থাকছে। যাতে ছাত্র-ছাত্রীর শরীর স্পর্শ না করে মােবাইলের সন্ধান পাওয়া যায়। যদি কোনও ছাত্র বা ছাত্রী মােবাইলের সঙ্গে ধরা পড়ে তাহলে তার পরীক্ষা সেদিনের মত বাতিল হয়ে যাবে। এছাড়াও যদি কেউ টোকাটুকি করতে গিয়ে ধরা পড়ে তাহলে তার পরীক্ষা সম্পূর্ণ এবং রেজিস্ট্রেশন দুই বাতিল হয়ে যাবে। যার নিদর্শন গত বছরেও দেখা গিয়েছিল।

তিনি আরও যােগ করেন, ‘গত বছরের মতাে এবছরও ৫’টি নির্দিষ্ট কারণের যেকোনও একটি কারণ ঘটলে তৎক্ষণাৎ আর এ অর্থাৎ রিপাের্টেড আগাইনস্ট করার জন্য প্রতিটি ভ্যেনু সুপার ভাইজার কে নির্দেশ দিয়েছি। এক- মােবাইল নিয়ে ভ্যেনুতে প্রবেশ করা যাবে না। দুই- টোকাটুকি করা যাবে না। তিন- ইনভিজিলেটর বা শিক্ষক শিক্ষিকা’কে নিগ্রহ করা যাবে না। চার- পরীক্ষা হল ভাঙচুর করা যাবে না। পাঁচ- পরীক্ষা হলে খাতা বা খাতার কোন অংশ জমা না দিয়ে বাড়িতে নিয়ে চলে গেলে পরীক্ষা বাতিল হবার সম্ভাবনা থাকবে।’

‘গত বছরের মতাে এবছরও বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দি এই তিন ভাষায় প্রশ্নপত্র হচ্ছে। পাশাপাশি অলচিকি ভাষায় প্রশ্নপত্র করা হয়েছে এবছর। এবছরও আমরা উর্দু, সাঁওতালি ও নেপালি ভাষাভাষী ছাত্র ছাত্রীদের জন্য ইন্টারপ্রিটারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষা সংক্রান্ত কোনও জরুরি প্রয়ােজন সংসদের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম ও হেল্প ডেস্ক নাম্বার চালু থাকবে। হেল্প ডেস্ক নাম্বার ০৩৩ ২৩৩৭ ০৭৯২ সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম ০৩৩ ২৩৩৭ ৪৯৮৪, ০৩৩ ২৩৩৭ ৪৯৮৫, ০৩৩ ২৩৩৭ ৪৯৮৬, ০৩৩ ২৩৩৭ ৪৯৮৭ এছাড়া জরুরি প্রয়ােজনে ০৩৩ ২৩৩৭ ০৭৯২ নাম্বারে ফোন করে জানাতে পারবেন।