ফের নিয়োগ নিয়ে এসএসসির হলফনামা তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন: নিয়োগ নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই৷ প্রায় ক্ষেত্রেই যোগ্যরা আদালতের দারস্থ হয়েছেন৷ মামলাকারীরা আদালতে আইনী লড়াই চালিয়ে জয়ও পেয়েছেন অনেকক্ষেত্রে৷ ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে উঠে নিয়োগ সংক্রান্ত এক মামলা৷ যোগ্যপ্রার্থীকে বঞ্চিত করে কম নম্বরের প্রার্থীকে কোন স্বার্থে চাকরি দেওয়া হল? এই বিষয়ে এসএসসিকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে৷ কিসের স্বার্থে যোগ্যপ্রার্থীকে বঞ্চিত করে কম নম্বরের প্রার্থীকে চাকরি দেওয়া হল? নিয়োগ সংক্রান্ত এই মামলার শুনানিতে স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে জানতে চাইল হাইকোর্ট৷ এ ব্যাপারে এসএসসিকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু৷ আগামী জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে মামলার পরবর্তী শুনানি হবে৷ তার আগে এসএসসিকে হলফনামা জমা দিতে হবে৷ আদালত সূত্রে প্রকাশ, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের বাসিন্দা তারিফ আলি গত ২০১২ সালে ভূগোল বিষয়ে আরএলএসটি পরীক্ষায় বসেছিলেন৷ পরীক্ষায় পাশ করে মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন৷ মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী আদালতকে জানিয়েছেন যে, ‘মেধা তালিকায় স্থান পেয়েও নিয়োগপত্র পায়নি তারিফ’৷ পরবর্তীতে তথ্যের অধিকার আইনে এসএসসি জানায়, পরীক্ষায় তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৫২৷ এমনকী আকাডেমিক স্কোরের জন্য নির্ধারিত নম্বরের চেয়ে তাঁকে ২ নম্বর কম দেওয়া হয়৷ মামলাকারী আইনজীবী আদালতে আরও জানান, এসএসসির বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, যাঁরা স্নাতকস্তরে ৫০ শতাংশের বেশি নম্বর পাবেন, তাঁরা স্নাতকের ১৪ নম্বরের মধ্যে ১২ নম্বর পাবেন৷ অথচ তারিফ স্নাতকস্তরে ৫০ শতাংশের বেশি নম্বর পেলেও তাঁকে ১২ নম্বরের পরিবর্তে ১০ দেওয়া হয়েছে৷ এসএসসির তরফে সঠিক নম্বর দিলে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর দাঁড়াতো ৫৪৷ মামলাকারী এসএসসির কাছে সমস্ত নথি সমেত লিখিত অভিযোগে জানান, একই মেধা তালিকায় ৫২.৩৩ নম্বর পেয়েও নিয়োগপত্র পেয়ে চাকরি করছেন৷ অথচ তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৫৪ হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে নিয়োগ পাওয়া থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে৷ এসএসসি তারিফ আলির অভিযোগের কোনও জবাব দেয়নি৷ এরপরই সুবিচার চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তারিফ৷ চলতি সপ্তাহে এসএসসিকে তীব্র ভৎর্‌সনা করে বিচারপতি বসু জানান, ‘‘এটা এসএসসির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ৷ কারণ আকাডেমিকসে নম্বর কীভাবে কমে যায় এবং যোগ্যপ্রার্থীকে বঞ্চিত করে কম নম্বরের প্রার্থীকে কীভাবে চাকরি দেওয়া হল?’’ আগামী জুন মাসে দ্বিতীয় সপ্তাহে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে৷ তার আগে এসএসসি কে হলফনামা জমা দিতে হবে৷