বুধবার কল্পতরু উৎসব উপলক্ষে দক্ষিণেশ্বরে এক অনুষ্ঠানে যােগ দিয়ে রাজ্যপাল নতুন বছরে পুরনাে সবকিছু ভুলে নতুন করে শুরু করার বার্তা দেন। প্রসঙ্গত, এদিন দক্ষিণেশ্বরে মহামণ্ডলে ৭৯তম কল্পতরু উৎসবে যােগ দেন রাজ্যপাল। এদিন বিকেলে দক্ষিণেশ্বরে পা দিয়ে রাজ্যপাল প্রথমে মন্দির চত্বর ঘুরে দেখেন। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, পুরনাে বিবাদ ভুলে যেতে চাই। নতুন বছরের শুরু হােক নতুন করে সুসম্পর্ক।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের বাসভবনে ফুল ও মিষ্টি পাঠান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে ওইদিনই রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরে দু’জনের বৈঠকের ছবি পােস্ট করে রাজ্যপাল টুইট করেন, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে খুব সুন্দর ও আন্তরিক আলােচনা হয়েছে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সকল সদস্যকে ২০২০ সালের শুভেচ্ছা। এরপরে এদিন রাজ্যপালের এই বক্তব্য যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
প্রকাশ, এদিন রাজ্যপাল যা বলেন, তার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, পুরনাে ঘা শুকোতে দিতে হয়, সেটাকে খোঁচাখুঁচি করলে তা বেড়ে যায়। তাই নতুন বছরের পুরনাে সব ভুলে নতুন করে শুরু করতে চান সুসম্পর্ক। এদিন রাজ্যপাল রামকৃষ্ণদেব ও স্বামী বিবেকানন্দের বাণী স্মরণ করে বলেন, সকলের এই দুই মহান পুরুষের বাণী মেনে চলা উচিত। সে রাজ্যপাল হােক, মুখ্যমন্ত্রী হােক কিংবা কোনও সাধারণ মানুষ। যে সম্পর্ক খারাপ হয়েছিল, সেই সম্পর্ক আবার নতুন করে গড়তে চাই। নতুন বছরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে চাই।
প্রসঙ্গত, এদিন সকাল থেকেই মহাসাড়ম্বরে দক্ষিণেশ্বরে পালিত হয় কল্পতরু উৎসব। যেখানে কেন্দ্র করে ভক্তদের ঢল নামে। কথিত আছে, ১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি কল্পতরু অবতারে অবতীর্ণ হন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। তারপর থেকেই এই দিনটিতে কল্পতরু উৎসব উদযাপিত হয় দক্ষিণেশ্বরে। মঙ্গলবার রাত থেকেই দক্ষিণেশ্বরে ভক্তদের সমাগম হয়। এদিন সকালে মন্দিরের বাইরে ফুলের ডালা হাতে ভক্তদের লম্বা লাইন চোখে পড়ে। কল্পতরু উৎসবের দিন পরমহংসদেবের কাছে মন থেকে চাইলে সে ইচ্ছা পূরণ হয়, সেই বিশ্বাস থেকেই সাতসকালে মন্দিরের বাইরে ভক্তের ঢল। দীর্ঘলাইন পেরিয়ে পুজো দিতে সময় লাগে বেশ খানিকটা।