ভােট পরবর্তী হিংসা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি। কি করে হিংসা দমন করা যায় সেব্যাপারে রাজ্যের চার প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলােচনা করতে বৃহস্পতিবার বিকালে রাজভবনে সর্বদল বৈঠক ডেকেছেন তিনি।
কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপিকে চিঠি পাঠিয়ে বৈঠকে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যপাল। ব্যক্তিগতভাবে তিনি চিঠি পাঠিয়েছে, পার্থ চ্যাটার্জি, দিলীপ ঘােষ, সুর্যকান্ত মিশ্র এবং সােমেন্দ্রনাথ মিত্রকে।
এদিকে রাজ্যপালের ডাকা এই বৈঠক নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। রাজ্যের অশান্ত পরিস্থিতি রুখতে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপের বিষয়টিকে মােটেই ভালো চোখে দেখছে না শাসকদল। রাজ্যপাল কি করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক ডাকেন সেটা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে তৃণমূলের অন্দরমহলে। তবে সােমেনবাবুসহ সকলেই রাজ্যপালের ডাকা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সােমেন মিত্রের কথায়, রাজ্যপাল সর্বদলীয় বৈঠক ডাকলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায় না। আমি রাজ্যপালের ডাকা বৈঠকে যাব। সিপিএমের পক্ষ থেকেও এই বৈঠকে উপস্থিত থাবর কথা জানানাে হয়েছে।
নির্বাচনপর্ব মিটতেই রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসা এবং অশান্তির ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। আর হিংসার ঘটনার জন্য বিজেপিকেই দায়ী করছে তৃণমূল কংগ্রেস। জগদ্দল, ভাটপাড়া, কোচবিহারে রাজনৈতিক সংঘর্ষে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যপাল কিছুদিন আগে দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে রাজ্যের হিংসার ঘটনা নিয়ে রিপাের্টও দিয়েছেন।
উল্লেখ্য বসিরহাট নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক রাজ্যপালের কাছে রিপাের্ট তলব করেছিল। ভােট পরবর্তী হিংসার ঘটনাকে অনভিপ্রেত বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তাঁর পাঠানাে রিপাের্টে দশ জুনের পর থেকে রাজ্যে ভােট পরবর্তী হিংসায় মােট ১২ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু রাজ্যপালের এই দাবি মানতে নারাজ তৃণমুল সুপ্রিমাে। রাজ্যপালের বক্তব্য নস্যাৎ করে তাঁর পাল্টা জবাব, রাজ্যপাল সমস্ত কিছু বাড়িয়ে বলেছেন। ভােটের পর থেকে এ পর্যন্ত দশজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আটজনই হলেন তৃণমূল কর্মী।
মুখ্যমন্ত্রীর সাফ বক্তব্য, আমি রাজ্যপালের পদকে সম্মান করি। কিন্তু তাঁর ভাষণকে নয়। উল্লেখ করা যেতে পরে ভােট পরবর্তী হিংসায় নিহত সকলের জন্য ক্ষতিপূরণের কথা ঘােষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজভবনসূত্রে খবর, ভােট মিটে যাওয়ার পরেই একের পর এক হিংসার ঘটনা ঘটছে রাজ্যে যার বলি হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আর সেকারণেই রাজ্যে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতেই সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যপাল।