মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার ধামাখালিতে বিধায়ক, প্রশাসনিক আধিকারিক, সাংসদদের নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের। সেই মতাে রাজ্যপাল হাজির হন জেলা পরিষদের গেস্ট হাউসে। যদিও যাঁদের নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল সেই সাংসদ, বিধায়ক, প্রশাসনিক আধিকারিকরা প্রায় কেউই আসেননি। যার ফলে এই বৈঠক হয়নি।
জেলা প্রশাসনের এই ভূমিকাকে নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন রাজ্যপাল ধনকর। পাশাপাশি একই কারণে বৈঠক ভেস্তে যায় সজনেখালিতেও।
তিনি বলেন, ১৭ অক্টোবর বৈঠকের কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২১ অক্টোবর জেলাশাসক একটি চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেন রাজ্য সরকারের অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত কোনও জনপ্রতিনিধিকে বৈঠকে ডাকতে পারবেন না। রাজ্যপাল এবিষয়ে আরও বলেন, ওই চিঠিতে আরও লেখা হয়েছে ২১-২৩ অক্টোবর পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক রয়েছে। যার ফলে সেখানেই রয়েছে সমস্ত শীর্ষ আধিকারিকরা। ফলে তারা আসতে পারবেন না। এই
ঘটনার পরই রাজ্যপাল প্রশ্ন তােলেন, ‘আমি কি রাজ্য সরকারের অধস্তন? কারও সঙ্গে বৈঠক করতে গেলে রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে? এটি সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার বিষয় নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেওয়ার পাশাপাশি এদিন ফের কার্নিভাল নিয়েও তােপ দাগেন রাজ্যপাল। বলেন, সবাই জানে ১১ অক্টোবর ৪ ঘণ্টা ধরে কার পাবলিসিটি হয়েছিল। রাজ্যপাল ঘটনার নিন্দা করার পাশাপাশি বলেন, রজাপাল হিসেবে যেখানে খুশি যেতে পারি। কিন্তু যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই জেলাশাসক অসুস্থ হচ্ছেন। মন্ত্রীদের বয়কটের সঙ্গে সরকারি আমলারাও যুক্ত হচ্ছেন কেন? কটাক্ষ করে বলেন, সরকার কি ছুটিতে চলে গিয়েছে? মুখ্যমন্ত্রী ছুটিতে যেতেই পারেন। কিন্তু সরকার ছুটিতে যেতে পারে না।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকার ও রাজ্যপাল সংঘাতের সূত্রপাত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে নিগ্রহের ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এরপর জিয়াগঞ্জ শিক্ষক পরিবারের খুনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্যপালের মন্তব্যের পর সেই ফাটল চওড়া হয়। পাশাপাশি কার্নিভালে তাঁকে ডেকে নিয়ে অপমান করেছে রাজ্য সরকার। তাঁকে সেন্সর করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, কার্নিভাল অনুষ্ঠানে তিনি ৪ ঘণ্টা উপস্থিত থাকলেও তাঁকে কোনও সংবাদমাধ্যমে দেখানাে হয়নি। তাঁর উপস্থিতিকে উল্লেখ পর্যন্ত করা হয়নি।