বাঁকুড়ায় মিলল পায়ের ছাপ, ফের বাঘের আতঙ্ক

ফাইল চিত্র

বাঁকুড়ায় বাঘের পায়ের ছাপ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শুক্রবার সাতসকালে বাঁকুড়া দক্ষিণ বন বিভাগের ফুলকুসমা বনাঞ্চলে বাঘের পায়ের ছাপ মেলে। প্রশ্ন উঠছে, জামশেদপুর বনবিভাগের ঘাটশিলা বনাঞ্চল থেকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার কি ফের বাংলায় প্রবেশ করেছে? জিনাতের পুরুষ সঙ্গীর খোঁজ পেতে তৎপর রয়েছে বন দপ্তর। বাঁকুড়া দক্ষিণ বন বিভাগের তিনটি টিম ফুলকুসমা বনাঞ্চলে গিয়েছে বলে খবর।

রাজ্যের মুখ্য বনপাল (পশ্চিম চক্র) সিঙ্গরম কুনাল ডাইভেল বলেন, বাঘের ছাপ পাওয়া গিয়েছে। তবে পায়ের ছাপটি পুরনো না কি নতুন তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। বন দপ্তরের বক্তব্য, হাতি তাড়াতে ঝাড়খণ্ডের ঘাটশিলা বনাঞ্চলে যথেচ্ছ পটকা ফাটানোতেই রয়্যাল বেঙ্গল সম্ভবত বাংলায় ঢুকে পড়েছে। বাঁকুড়া দক্ষিণ বনবিভাগে নতুন করে ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হচ্ছে।

ঘাটশিলা বনাঞ্চল থেকে জিনাত যদি দক্ষিণ বাঁকুড়া বনবিভাগে প্রবেশ করে, তাহলে তাকে কমপক্ষে দক্ষিণ বাঁকুড়া বনবিভাগে হাঁটতে হয়েছে। সিঙ্গরম কুনাল ডাইভেল জানিয়েছেন, রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের পক্ষে এক রাতে ৪০ কিমি হাঁটা অস্বাভাবিক নয়। তাঁর এই বক্তব্যে এটা পরিষ্কার যে বাঁকুড়ায় যে পায়ের ছাপটি মিলেছে, সেটি নতুন হলেও হতে পারে।


বাঘ ইস্যুতে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড রাজ্যের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, বাঘ পালিয়ে আসে কেন রোজ রোজ? তোমার বাঘ তুমি সামলাতে পারছো না কেন! তিনি বলেন, ওরা নিশ্চয়ই বাঘকে খেতে দেয় না। তাই তো বাঘ পালিয়ে আসে। আর আমাদের গ্রামগুলো ভয়ে কাঁপে।

এদিকে গত কয়েক বছরে সুন্দরবনের মৈপীঠ, বৈকুন্ঠপুর পঞ্চায়েত এবং গুড়গুড়িয়া ভুবনেশ্বরী পঞ্চায়েত এলাকায় বাঘের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে। মাত্র ১৪ দিনের মধ্যে সেখানে সাতবার হানা দিয়েছে বাঘ। পরিস্থিতি সামাল দিতে মোহনপুর থেকে কুলতলির দেউলবাড়ির দেবীপুর পর্যন্ত এলাকায় জঙ্গলে ১০০টি ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বন দপ্তর।

এর পাশাপাশি জঙ্গলের বাঘকে জঙ্গলে রাখার জন্য এ বার বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করতে চলেছে বন দপ্তর। বন দপ্তর সূত্রে খবর, বাঘের প্রবেশ আটকাতে যে নাইলনের ফেন্সিং লাগানো রয়েছে, সেই ফেন্সিংয়ের ৫ ফুট উপরে লাল, নীল ও সবুজ রঙের আলো বসানো হবে। সেই আলো এমন ভাবে বসানো হবে, যাতে জঙ্গলের বাঘ সেই ফেন্সিংয়ের কাছে এলেই তার নজরে পড়বে এবং ভয় পেয়ে জঙ্গলে ঢুকে যাবে।