এগিয়ে আসছে রামনবমীর দিন। একদিকে যখন রাজ্যের গেরুয়া শিবিরে জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে, অন্যদিকে দুশ্চিন্তার মেঘ দেখছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তাঁর আশঙ্কা, রামনবমীর দিন রাজ্যে অশান্তি করতে আসতে পারে ভিনরাজ্যের বিরোধীরা। তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে অনেক ভিনরাজ্যের মানুষের বাস। তবে সকলে অশান্তি করেন না। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ রয়েছেন। তাঁদের চিহ্নিত করতে পারলেই গোলযোগের সম্ভাবনা কম। তিনি এবং মুখ্যমন্ত্রী প্রতিবারই রামনবমী দিন রাত জাগেন বলেও জানিয়েছেন।
অপরপক্ষে, ভোটের আগেই এক অন্যরকম প্রস্তুতি চলছে বিজেপি শিবিরে। রামনবমীকে সামনে রেখে নতুন করে হিন্দুত্বের উপর জোর দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। একাধিক পরিকল্পনা নিয়েছেন তাঁরা। শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষের মতো বিরোধী নেতারা অস্ত্র হাতে মিছিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আরএসএসের পক্ষ থেকেও বিজেপিকে একজোট থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রামনবমী দিন আঁটঘাট বেঁধে মাঠে নামবেন তাঁরা। বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী। অর্থাৎ,রামনবমীতে মাঠের এক অংশও তাঁরা ছাড়বেন না। রাজ্যজুড়ে চলবে শক্তির প্রদর্শন। এর পাল্টা জবাবও দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, বাংলার মানুষ রামকৃষ্ণের ভাবাদর্শে বিশ্বাসী। রামকৃষ্ণ বলেছিলেন, যত মত তত পথ। তাই বাংলায় সাম্প্রদায়িক রাজনীতি চলবে না। এছাড়াও তিনি জানান, অমিত শাহেদের বঙ্গে পদ্মফুল ফোটার আশা থাকলেও সে গুড়ে বালি। ধর্মের রাজনীতি চালালে তা কোনোদিনও সম্ভব হবে না।
রামনবমী মিছিল প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু জানাতে নারাজ আরএসএস। প্রশাসনের উপরই সবকিছু চাপিয়ে দিয়েছে তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, আইনশৃঙ্খলা সামলানোর দায়িত্ব পুলিশ প্রশাসনের। তাঁরা যা ঠিক করবে তাই হবে। এ প্রসঙ্গে আরএসএস-এর জিষ্ণু বসু জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রীতিতে ধর্ম পালন করা হয়। সেক্ষেত্রে যদি এ রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন অস্ত্র-মিছিলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে , সেটা তাহলে তাদের সিদ্ধান্ত। এদিকে বারংবার হুঙ্কার ছাড়ছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। দলের কর্মীদের সঠিক প্রস্তুতির সঙ্গে মিছিলে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে, রামনবমী প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষ করে বলেছেন, “রাজ্যের যা পরিস্থিতি তাতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়া উচিত বলে আমার ব্যক্তিগত মত।”