উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। উত্তরবঙ্গ পুলিশের দাবি, বন্দুক কেড়ে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেনি। যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল, তা কোনও পুলিশের ছিল না। তদন্তে জানা গেছে, আসামি সাজ্জাক আলম আদালত চত্বরেই ওই বন্দুক পান। তাঁকে বন্দুকটি দিয়েছিলেন আব্দুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার বিকেলে, ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর ইকরচালা কালীবাড়ির কাছে। খুনের মামলায় বিচারাধীন বন্দি সাজ্জাককে আদালত থেকে জেলে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। পথে প্রস্রাব করার কথা বলে প্রিজন ভ্যান থেকে নামার পর পাহারায় থাকা দুই পুলিশকর্মীর ওপর গুলি চালিয়ে পালিয়ে যান সাজ্জাক। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, তিনি পুলিশের বন্দুক কেড়ে গুলি চালিয়েছেন। তবে বৃহস্পতিবার আইজি উত্তরবঙ্গ রাজেশকুমার যাদব জানান, বন্দুকটি পুলিশের ছিল না।
এই ঘটনায় আদালত চত্বরে সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কড়া পুলিশি পাহারার মধ্যেও বন্দুক কীভাবে সাজ্জাকদের হাতে গেল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। আইজি রাজেশকুমার যাদব জানিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হামলায় আহত অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর নীলকান্ত সরকার এবং কনস্টেবল দেবেন বৈশ্য বর্তমানে মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। তাঁদের দেখতে বৃহস্পতিবার সেখানে যান রাজ্যের ডিজি রাজীব কুমার, এডিজি জাভেদ শামিম এবং আইজি উত্তরবঙ্গ। পুলিশ সূত্রে খবর, হামলার পর সাজ্জাক একটি মোটরবাইকের পেছনে বসে পালিয়ে যান। ইসলামপুর ও গোয়ালপোখরের বিভিন্ন এলাকায় নাকা-তল্লাশি চালিয়ে বাংলা-বিহার সীমানা ‘সিল’ করা হয়।
পুলিশ মনে করছে, সাজ্জাক আলমকে পালাতে সাহায্য করেছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী আব্দুল হোসেন ওরফে আবাল। পুলিশের দাবি সাজ্জাক আলম কালিয়াচকে পোল্ট্রি ফার্মের মালিক খুনে অভিযুক্ত। এছাড়া অনুপ্রবেশকারী আব্দুল হোসেনের নাম ডাকাতি সহ একাধিক মামলায় জড়িয়েছে। ইসলামপুর জেলে থাকাকালীন সাজ্জাক ও আবালের পরিচয়। সাজ্জাকের জেল পরিবর্তনের ফলে দুজনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলেও বুধবার সাজ্জাক ও আবাল দুজনেই ইসলামপুর আদালতে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগে কোনওভাবে আগ্নেয়াস্ত্র হস্তান্তর হয়েছে বলেই দাবি করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে স্নিফার ডক দিয়ে সারারাত তল্লাশি চালালেও আসামির খোঁজ পাওয়া য়ায়নি। পুলিশের অনুমান, অভিযুক্তরা বিহার কিংবা বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে পারে।