অবশেষে দক্ষিণবঙ্গে নামল স্বস্তির বৃষ্টি!

নিজস্ব সংবাদদাতা,  কলকাতা:  গত কয়েক সপ্তাহ কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে শুরু হয়েছিল হাহাকার। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা বঙ্গবাসীর। প্রতিদিন কর্মমুখী মানুষ ঘর্মাক্ত কলেবরে প্রবেশ করছেন কর্মস্থলে। দিনের শেষে এমন কি রাত বিরেতে একইভাবে ঘরে ফিরছেন তাঁরা। মাথার ওপর প্রখর সূর্যতাপ! নাজেহাল মানুষ আবহাওয়া একটু নরম হলেই কিম্বা সূর্যের তাপ কমতেই আশায় বুক বাঁধছেন সকলে। এবার বুঝি শুরু হবে বৃষ্টি!

আজ দুপুর ১ টা ১৫ নাগাদ হাসনাবাদ থেকে ট্রেনটা দমদম জংশনে ঢোকার আগে সিগন্যাল না পেয়ে দাঁড়িয়ে গেল মাঝপথে। যদিও এটা নিত্যকার ঘটনা। চিরকাল অবহেলিত এই লাইনটি। প্রতিদিন দমদমে ট্রেন ঢোকার আগে ৫-১০, এমনকি ২৫-৩০ মিনিট অবধি ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকে। আর এই গরমে নাজেহাল মানুষ রেল কর্তৃপক্ষকে গালাগালি দিতে শুরু করেন। আজ কিন্তু ঘটল তাঁর ব্যতিক্রম! মাঝপথে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের ভিতর ঢুকতে শুরু করল মনোরম শীতল হাওয়া! ট্রেন যাত্রীদের আর কোনও অভিযোগ নেই। রেল কর্তৃপক্ষের দীর্ঘদিনের অন্যায়, অত্যাচার বেমালুম ভুলে গেলেন তাঁরা। এক যুবক সবাইকে শুনিয়ে বলতে লাগল,’এসির হাওয়া দিচ্ছে।’

এদিকে মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই ট্রেনটি দমদম জংশনে প্রবেশ করল। ট্রেন থেকে নামার সময় মেঘলা আকাশ দেখে অনেক ট্রেন যাত্রীদের বলতে শোনা গেল ‘আয়! আয়! আর কত অভিমান করে থাকবি, প্রাণ যে যায়!’ এতদিন আবহাওয়া দফতর অনেকবার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে সেভাবে কিছুই হয়নি। অবশেষে দুপুর দেড়টার পর অভিমানের সমস্ত আগল সরিয়ে তিলোত্তমায় নামল স্বস্তির বৃষ্টি! সেইসঙ্গে ভয়ঙ্কর বজ্রপাতও! কিছুটা হলেও হাঁফ ছেড়ে বাঁচল শহরবাসী! ধর্মতলার সন্নিকটে ফুটপাথের অবুঝ শিশুটাও পিছু না ভেবে চাতকের মতো ভিজল সেই শীতল বারিধারায়!


এটাই আষাঢ় মাসের প্রথম বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার শহর কলকাতা সহ একাধিক জেলায় নামল এই স্বস্তির বৃষ্টি। সেই বৃষ্টির সঙ্গে একদিকে ঝোড়ো হাওয়া, আর অন্যদিকে বিপদজনক প্রবল বজ্রবিদ্যুৎ। এভাবে দমদম, যাদবপুর, বেহালা, ধর্মতলা, নিউ টাউন, শোভাবাজার, শ্যামবাজার, কসবা এলাকায় বৃষ্টি নেমে স্বস্তি দিয়েছে মানুষকে। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা, যেমন হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, নদিয়া, ঝাড়গ্রামে কম বেশি বৃষ্টির হয়েছে।

যদিও আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গে আপাতত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করতে এখনও তিন-চার দিন সময় লাগবে। তবে একদিনে বিক্ষিপ্ত হালকা বা ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ফলে তাপমাত্রা কিছুটা হলেও কমবে। ভ্যাপসা গরমে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন বঙ্গবাসী।