নিজস্ব প্রতিনিধি: এবার তৈলাক্ত বাঁশ এর প্রসঙ্গ তুললেন জেল হেফাজতে থাকা মানিক ভট্টাচার্য। এদিন মানিক বাবু জানালেন -‘ তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে তিনি দু’ফুট করে উঠছেন এবং এক ফুট করে নেমে যাচ্ছেন। এরফলে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। পৌঁছতে পারছেন না গন্তব্যে’। কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডির তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি।প্রাথমিকে নিয়োগ মামলার শুনানিতে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল মানিককে। নিজের বক্তব্য তিনি নিজেই জানিয়েছেন। ইডির তদন্তকে স্কুলে পড়াকালীন বাঁদরের তৈলাক্ত বাঁশের অঙ্কের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
মানিক জানান, যে কোনও অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে পাঠানোর আগে তাঁর বিরুদ্ধে কী কী তথ্য রয়েছে, তা জানাতে হয় তদন্তকারী সংস্থাকে। আগেও এই ধরনের নির্দেশের উদাহরণ রয়েছে। আদালত চাইলে এ বিষয়ে ইডির কাছে ব্যাখ্যা চাইতে পারে। কারণ, দিনের পর দিন ইডি দাবি করছে, তদন্ত চলছে। এর পরেই মানিক বলেন, ”এটা তো সপ্তম-অষ্টম শ্রেণির সেই বাঁদরের তৈলাক্ত বাঁশ ধরে ওঠানামার অঙ্কের মতো ব্যাপার হচ্ছে। বার বার চার্জ গঠনের সময়ে ইডি দাবি করছে যে, তাদের তদন্ত চলছে।”পরে আদালত থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সামনেও একই কথা বলেন মানিক।
ইডির তদন্ত প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ”তৈলাক্ত বাঁশে দু’ফুট করে উঠছি। এক ফুট করে নামছি। ”প্রাথমিক মামলায় শনিবার আদালতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির করানো হয়েছিল প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও। তাঁর নথি সংক্রান্ত প্রশ্নে ইডির যুক্তিকে ‘দুর্বল’ বলে উল্লেখ করেছেন বিচারক। শুনানি চলাকালীন পার্থের আইনজীবী আদালতে জানান, ইডির কাছ থেকে এই সংক্রান্ত কিছু নথি চাওয়া হয়েছিল। যা ইডি দেয়নি।
এ প্রসঙ্গে ইডির আইনজীবী জানান, পার্থের মামলায় আরও একটি রিপোর্ট তাঁরা প্রস্তুত করছেন। পরবর্তী তদন্তের জন্য সে সব নথি প্রয়োজন। তাই পার্থের আইনজীবীকে নথি দেওয়া হয়নি। ইডির এই যুক্তি শুনে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারক। একে ‘দুর্বল যুক্তি’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এর পর পার্থের তরফে তাঁর আইনজীবী আবেদন করেন, নথি সম্পর্কে নিজেদের বক্তব্য লিখিত আকারে জানাতে হবে ইডিকে। বিচারক আবেদন মঞ্জুর করে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সংস্থাকে।
পার্থ এবং মানিক ছাড়াও শনিবার নিয়োগ মামলায় আদালতে হাজির করানো হয়েছিল এই মামলায় অন্যতম ধৃত ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র এবং কুন্তল ঘোষকে। পার্থের মতোই ভার্চুয়াল মাধ্যমে আদালতের শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও। অর্পিতার আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল অসুস্থ। তাঁর স্ত্রীরোগজনিত সমস্যা রয়েছে। ওষুধে কাজ হচ্ছে না। অর্পিতার মেডিক্যাল রিপোর্টের জন্য আইনজীবী আগেই আবেদন করেছিলেন। তা আসেনি বলে অভিযোগ। আবার সেই রিপোর্টের জন্য আবেদন করা হয়েছে।কুন্তলকেও আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। তাঁর আইনজীবী ইডির তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
বিচারককে জানান, বার বার ইডি দাবি করছে, তাদের তদন্ত চলছে। আবার সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটের কথাও বলা হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হলে বিচার কবে হবে? জানতে চান কুন্তলের আইনজীবী। তাঁর মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১৭ অগস্ট। আদালত থেকে বেরোনোর সময়ে কুন্তল জানান, রবিবার ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে থাকতে পারবেন না বলে তাঁর মনখারাপ। বলেন, ”ফাঁদে পড়ে আছি। বিচার পাচ্ছি না।”