দুর্গাপুজোয় আর হাতে গোনা কয়েকদিন মাত্র। কিন্তু এবছর আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে যেন সেই আড়ম্বরতা নেই সাধারণ মানুষের মধ্যে। দিকে দিকে সকলের শুধু একটাই দাবি ”বিচার চাই”। ইতিমধ্যে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্য সরকারের দেওয়া অনুদান ফিরিয়েছেন বহু ক্লাব। পুজোর ব্যবসা নিয়েও যথেষ্ট সন্দিহান ব্যবসায়ীরা। সকলের মনে পুজো নিয়ে উৎসাহটা কোথায় যেন ম্লান হয়ে গিয়েছে।
এবার সেই পুজো নিয়ে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের প্রতিনিধি কিঞ্জল বলেন, ”এমন নয় যে বাংলায় ২০০ বছর ধরে কোনও দুর্গাপুজো হয়নি। দুর্গাপুজো হয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রাম তার জন্য প্রভাবিত হয়নি। স্বাধীনতাও এসেছিল। আমার মনে হয়, এ বারের পুজোও ঠিক সেই রকমই হবে।”
জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন নিয়ে কটাক্ষের সংখ্যাও কম নয়। তাঁদের উদ্দেশেও বার্তা দিয়ে কিঞ্জল বলেন, ”আমরা নাটক করব, ছবি আঁকব, নাচব, আন্দোলন করব। আমরা ন্যায়ের পথে আছি। আমরা কোনও মিথ্যা কথা বলছি না যে লুকিয়ে করব। আমাদের সৎ সাহস আছে। যা করব বুক বাজিয়ে করব।” এর পরই দৃশ্যত আক্ষেপ মিশ্রিত গলায় কিঞ্জল জানান, ডাক্তারদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। তাই ডাক্তারদের ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে কারও কিছু যায়-আসে না।”
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে জুনিয়র চিকিৎসকদের অবস্থান কর্মসূচি এখনও অব্যাহত। গত মঙ্গলবার থেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে রোদ, বৃষ্টি, ঝড় নিয়ে আন্দোলনে অনড় তাঁরা। ইতিমধ্যে অবশ্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার বৈঠকের কর্মসূচি আয়োজিত হলেও প্রত্যেকবারই তা ভেস্তে গিয়েছে। প্রথমে নবান্নে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হলেও লাইভ সম্প্রচারের দাবিতে দুই পক্ষের ভিন্ন মতবাদে তা ভেস্তে যায়।
গত শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির চৌকাঠ থেকে ফিরে এসেছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। সেদিনও জুনিয়র চিকিৎসকেদের তরফে সরাসরি সম্প্রচারের দাবি জানানো হয়। কিন্তু সরকার পক্ষ তা মেনে না নেওয়ায় চলে দ্বন্ধ। সরকারের তরফে শুধুমাত্র ভিডিওগ্রাফির দাবি জানানো হয়। কিন্তু সেই ভিডিও রেকর্ডিং পরে আদালতের নির্দেশ মেনে তাঁদের হাতে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। ততদিন পর্যন্ত কোনও পক্ষই ওই ভিডিও ব্যবহার করবে না। পরিবর্তে দু’পক্ষের সই-সহ আলোচনার সারসংক্ষেপ দেওয়া হবে। তবে শুরুতে তাতেও রাজি ছিল না জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দল।
শেষে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষার পর স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থেরা যখন মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন জুনিয়র ডাক্তারেরা দাবি করেন, তাঁরা সরকারের শর্ত মতোই বৈঠকে রাজি। কিন্তু চন্দ্রিমা তাঁদের জানিয়ে দেন, তখন আর বৈঠক সম্ভব নয়।