সীমান্তে শান্তিরক্ষায় সাবধান বাণী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বিষয়টির মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে বললেন ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে। সেইসঙ্গে তিনি কাউকে কোনও প্ররোচনায় পা দিতে নিষেধ করেছেন। সোমবার মুর্শিদাবাদে সরকারি কর্মসূচিতে গিয়ে তিনি বলেন, কারও কারও লক্ষ্য দুই দেশের মধ্যে গন্ডগোল বাধিয়ে দেওয়া। এরপর মাঝখান থেকে সরে পড়া। সেজন্য রাজ্যবাসীকে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কারও প্ররোচনায় পা দিয়ে সীমান্তের ওপারে যাওয়া চলবে না। কোনওমতেই প্ররোচনায় পা দেওয়া যাবে না।
সোমবার মুর্শিদাবাদের লালবাগে ‘নবাব বাহাদুর ইনস্টিটিউশন’-এ ছিল সরকারি পরিষেবা প্রদানের কর্মসূচি। সেই কর্মসূচিতে জেলার মানুষের হাতে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন নবাবের পরিবারের সদস্যরাও। সেই সময় সীমান্তে শান্তিরক্ষা নিয়ে সাধারণ মানুষকে বার্তা দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা। তিনি কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে নিষেধ করেছেন।
তাঁর কথায়, ‘মুর্শিদাবাদের ওপারে বাংলার সীমান্ত রয়েছে। সেই সীমান্ত বিএসএফ দেখুক। আমাদের উপর অত্যাচার হলে আমরা দেখব।’ তারপরেই সাধারণ মানুষকে সতর্কও করেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘দয়া করে কারও প্ররোচনায় পা দিয়ে ওদিকে যাবেন না। কারণ অনেকের উদ্দেশ্য হল দাঙ্গা লাগিয়ে দেওয়া। দুই দেশের মধ্যে গন্ডগোল বাধিয়ে সরে পড়া। আমি চাই সীমান্তে বিএসফ দায়িত্ব নিক, যাতে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়। আমি লোকাল পুলিশকে বলব, তাঁরা যেন মাইকিং করে ফিরে আসতে বলেন।’
প্রসঙ্গত এর আগে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কয়েক সপ্তাহ আগে রাজ্যে বেশ কয়েকজন জঙ্গি ধরা পড়ে। তদন্তে রাজ্যে একাধিক ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের হদিশ মেলে। এই একাধিক জঙ্গি যোগ ও অনুপ্রবেশকারী ধরা পড়ার পরে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সমালোচনার মুখে পড়ে রাজ্য প্রশাসন। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওপর দায় চাপিয়ে বলেছিলেন, বিএসএফই রাজ্যে গুন্ডা, লোক ঢোকাচ্ছে। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের বিদেশ মন্ত্রক সরকারিভাবে তার জবাবও দিয়েছিল। জানিয়েছিল, অনিয়মের কোনও প্রশ্ন নেই।
এ বার মুর্শিদাবাদে দাঁড়িয়ে মমতা জানিয়ে দিলেন, তিনি চান সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব নেবে বিএসএফ। এজন্য তিনি তাঁদের এগিয়ে আসতে বলেছেন। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী এদিন মুর্শিদাবাদে গঙ্গার ভাঙন নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন। তিনি কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী না থেকে ভাঙ্গন রোধের জন্য ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছেন। এদিন তিনি বলেন, ‘এখানে দেড় হাজার হেক্টর জমি ধসে যাচ্ছে গঙ্গা-ভাগীরথীর জলে। বার বার কেন্দ্রীয় সরকারকে লিখেছি। পাত্তা দিচ্ছে না। নির্বাচনের সময় হিন্দু-মুসলিম রাজনীতি করতে আসে। ভাই-বোনদের মধ্যে ভাগাভাগি করতে আসে। যখন বন্যা হয় তাকিয়েও দেখে না।’ এরপরেই গঙ্গাভাঙন রোধে নবাবের জেলা মুর্শিদাবাদে ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছেন মমতা।