নিজস্ব প্রতিনিধি : সোমবার দুপুরে বিধানসভায় বনমহোৎসব দিবস পালন করে প্রকৃতি সবুজায়নের পক্ষে বিশেষ বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এদিন বিধানসভায় প্রকৃতিকে রক্ষা করার আহ্বান জানান মমতা। এদিন বনমহোৎসব দিবসে মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের বন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, রাজ্যের পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকেই। উদ্ভিদ রক্ষার বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, “আমি প্রকৃতিকে ভালবাসি, সবুজকে ভালবাসি। এ বিষয়ে আমার অনেক কবিতাও আছে। সবুজ নিয়ে আমরা যেন অবুঝ না হই। সবুজকে ধ্বংস করো না, সবুজকে আঘাত দিও না। ওরাও বাঁচতে চায়, ওরাও যে হাসতে চায়।” পাশাপাশি এই অনুষ্ঠানে বন দফতরের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও ফুলের তোড়ার বদলে এদিন গাছের চারা দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়ার পরামর্শও দেন মমতা।
বীরহাবাকে পাশে বসিয়েই মমতা এদিন বলেন, “বন দফতর অনেক কাজ করেছে। গোটা সুন্দরবনে ২০ কোটিরও বেশি ম্যানগ্রোভ গাছ লাগানো হয়েছে। যা নদীভাঙন রুখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। এটা বন দফতরের বিশাল সাফল্য।” মমতার ভাষায়, “প্রকৃতি আমাদের যে কীভাবে রক্ষা করে তা বলার কথা নয়। মানুষের জীবন ধারণের ক্ষেত্রে প্রকৃতি মাতা হিসেবে সহায়ক হন। আগে বন দফতরের পরিধি ছিল চার হাজারের কিছু বেশি বর্গ কিলোমিটার। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৬ হাজার ৮ লাখ বর্গ কিলোমিটার। বন্য গাছপালা, বন্যপশুর পাশাপাশি জঙ্গল অঞ্চলে বাস করে এমন প্রত্যেকটা মানুষের খেয়াল রেখেছি আমরা।”
এরপরই সংবর্ধনা হিসেবে গাছের চারা দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে মমতা বলেন, “আগামী বছর থেকে সংবর্ধনা হিসেবে ফুলের তোড়া না দিয়ে গাছের চারা দেওয়া হবে।” তবে, মুখ্যমন্ত্রীর বন দফতরের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করার পশ্চাতে রাজনৈতিক গন্ধ পেয়েছে রাজনৈতিক মহল। উল্লেখ্য, বন দফতরের মহিলা আধিকারিককে কুকথা বলে মন্ত্রিত্ব খুইয়েছেন অখিল গিরি। সোমবারই তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। ইস্তফা দিলেও বন দফতরের আধিকারিকদের একাংশের বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি। গত শনিবার বন দফতরের ওই মহিলা আধিকারিক মনীষা সাউকে ফোন করেছিলেন বীরবাহা এবং প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। সে দিনই তৃণমূল জানিয়ে দিয়েছিল, গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী রুষ্ট। সেই প্রেক্ষাপটে বন দফতরের কাজে মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। পাশাপাশি, প্রাক্তন কারামন্ত্রীর বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অভয় দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য প্রশাসন ন্যায়ের সাথে নিজ দায়িত্ব পালন করতেই পারেন।