মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারির পরই বালি পাচার রুখতে নড়েচড়ে বসল বীরভূম জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলাশাসক ও বিশাল পুলিশবাহিনীকে সঙ্গে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নানুরের একাধিক বালিঘাটে অভিযান চালান বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়। অজয় নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলার সময় বেশ কয়েকটি ট্রাক আটক করা হয়। প্রশাসনের আধিকারিকদের দেখে কয়েকটি ফাঁকা ট্রাক এলাকা ছাড়ার তোড়জোড় শুরু করে। সেগুলিকেও আটক করা হয়েছে। সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট ট্রাকের মালিকদের ডেকে পাঠানো হবে। প্রশাসনের এই পদক্ষেপের ফলে অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ হওয়ার আশা করছেন স্থানীয়রা।
গত ২ জানুয়ারি নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে বীরভূমের জেলাশাসক বালি পাচার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তুমি বীরভূমে যে গতিতে কাজ শুরু করেছিলে, হঠাৎ ওখানে কী এমন হল যে, সব থেকে বেশি বালি পাচার হচ্ছে?’ এখানেই অবশ্য শেষ নয়, ৩ জানুয়ারি বোলপুরে গিয়েছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার।
সূত্রের খবর, জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। সেই বৈঠকে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের এই ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সূত্রের খবর, প্রশাসনের শীর্ষস্তর থেকে কড়া বার্তা আসার পর থেকেই বীরভূমের বেআইনি বালি পাচার নিয়ে নজর রাখছিল জেলা প্রশাসন। আর এবার মধ্যরাতে হল অভিযান। কয়েকটা ট্রাক ছাড়াও বাজেয়াপ্ত করা হয় হিসাবের খাতা, নথিপত্র এবং দু’টি পকলেন (বালি তোলার যন্ত্র)। মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কবার্তার পর জেলা প্রশাসন যে তৎপর হয়েছে, তা এই অভিযানে স্পষ্ট। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, অবৈধ বালি উত্তোলন ও পাচারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে নিয়মিতভাবে এই ধরনের অভিযান চালানো হবে।
বীরভূমের নানুর, বোলপুর, ময়ূরেশ্বর-সহ একাধিক জায়গা থেকেই বালি পাচারের অভিযোগ নতুন নয়। সারা বছরই ওই সব এলাকা থেকে বালি পাচার করা হয়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়েক মাস ধরেই রাতের অন্ধকারে নদীর নীচ থেকে পাইপের মাধ্যমে পাম্পের সাহায্য বালি তুলে অবাধে পাচার করা হচ্ছিল।