রাজ্যে ভােট পরবর্তী হিংসা নিয়ে কড়া চিঠি দিয়ে দিল্লি গিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন রাজ্যপাল। এদিকে বিরােধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠকের পরেই রাজ্যপালের দিল্লি সফর নিয়ে নানান জল্পনা চলছে।
রাজ্যে ভােট পরবর্তী হিংসার ইস্যুতে রাজ্যপালের অতিসক্রিয়তা নিয়ে বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রশ্ন করা হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা প্রশ্ন, রাজ্যে হিংসার ঘটনা কি এখন কারাে চোখে পড়ছে? কেউ দেখছেন? আসলে কারাে চোখে ন্যাবা হলে কী করব? বাচ্চা ছেলে হলে তা-ও বকে চুপ করানাে যায়। নাম না করে রাজ্যপালের বালখিল্যতা নিয়ে এভাবেই কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে সাংসদ মহুয়া মৈত্র তাে দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যপালকে ‘আঙ্কেলজি’ বলে সম্বােধন করছেন। তবে এদিন রাজ্যপালের দিল্লি যাওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মমতা। বলেছেন নীরবতাই।
তবে রাজ্যপালকে রাজ্য থেকে অপসারণ নিয়ে মমতার কটাক্ষ, আসা যাওয়ার গান ওরাই গায়। নতুন রাজ্যপাল আসর সময় কিংবা বদল করার সময় রাজ্যের সঙ্গে পরামর্শ করতে হয়। কিন্তু মােদি সরকার তা মানেনি। রাজ্যপালকে এই রাজ্য থেকে সরানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আগে কম পক্ষে তিনবার চিঠি লিখেছি।
দিল্লি যাওয়ার আগে ভােট পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে একের পর এক টুইট করেছেন রাজ্যপাল। এই বিষয়ে পদক্ষেপ করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় চিঠি লিখেছেন তিনি। রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই ইস্যু নিয়ে আলােচনা হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন রাজ্যপাল।
রাজ্যের ভােট পরবর্তী হিংসাশ্রিত জায়গায় কেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে যাননি, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। একই সঙ্গে প্রব হয়েছেন রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়া নিয়েও। দিল্লি সফরে গিয়ে বুধবার কয়লামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন ধনকড়। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গেও। এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেন তিনি।
দিল্লি গিয়ে রাষ্ট্রপতি এবং একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে রাজ্যপালের দেখা করা নিয়ে তির্যক মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর– কার সঙ্গে উনি (রাজ্যপাল) দেখা করবেন, সেটা তার ব্যাপার। কারণ উনি তাে ওদেরই লােক।
রাজ্যপালের সঙ্গে বিজেপিকেও একহাত নেন মমতা। বলেন, বাংলায় হারার পরেও লজ্জা নেই বিজেপির। এটাই বিজেপির অভ্যেস। নির্বাচনের সময় হিংসা হয়েছিল। আমি হিংসাকে সমর্থন করি না। কিন্তু তখন আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আমার হাতে ছিল না। পরে পুলিশ ও প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিই। বর্তমানে রাজ্যে কোনও রাজনৈতিক হিংসা নেই। এটা বিজেপির গিমিকের হিংসা।
সােস্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকদিন ধরে উত্তরবঙ্গে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চাই বলে দাবি উঠছে। অভিযােগ উঠেছে তৃণমূল নেতারা এতে ইন্ধন যােগাচ্ছেন। যদিও রাজ্য বিজেপি নেতা এই অভিযােগ অস্বীকার করেছেন। এই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আরেকটা বঙ্গভঙ্গ আমরা হতে দেব না। বাংলা ভাগ করতে আসবে, তারা টের পাবে, বাংলা কতটা শক্তিশালী।