নববর্ষের সকাল থেকেই দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মায়ের মন্দির ও কালীঘাটের মন্দিরে ভক্তদের ভিড় দেখা গিয়েছে। দক্ষিণেশ্বর মন্দির প্রাঙ্গণে প্রভাতী সংকীর্তন গানের মধ্য দিয়ে মায়ের আহ্বান করা হয়। যে সমস্ত মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা নিজেদের ব্যবসার উন্নতির জন্য শ্রী গণেশ ও মা লক্ষ্মীর প্রতিমা পুজো করেন। অনেকে টানা ৪-৫ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে মায়ের দর্শন ও পুজো সম্পন্ন করেন। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে ভিড় দেখা গেল কালীঘাট মন্দির চত্বরেও। নবনির্মিত স্কাইওয়াক ঘিরে ভক্তদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। দর্শনার্থীদের জানিয়েছেন, মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে নতুন বছর শুরু করার লক্ষ্যেই সকাল সকাল লাইনে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা। দক্ষিণেশ্বর, কালীঘাটের পাশাপাশি বেলুড় মঠ, লেক কালীবাড়ি, আদ্যাপীঠ সহ শহরে সমস্ত মন্দিরেই মঙ্গলবার সকাল থেকে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
জেলার মন্দিরগুলিতেও নববর্ষের দিন ভিড় চোখে পড়েছে। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে সাজিয়ে তোলা হয় কোচবিহারের মদনমোহন মন্দির। নতুন বছরের প্রথম দিন মন্দিরের বারান্দায় এসে ভক্তদের দেখা দেন কোচবিহারবাসীর প্রাণের ঠাকুর মদনমোহন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ মদনমোহনকে মন্দিরের বারান্দায় বের করা হয়। ট্রাস্ট বোর্ডের বড়বাবু জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রতিবারের মতো এবারেও নতুন বছরে মদনমোহন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বারান্দায় অধিষ্ঠান করেন।’ জলপাইগুড়ির যোগমায়া কালীবাড়িতে সকাল থেকেই ভক্তদের ঢল নামে। জাগ্রত এই মন্দিরে পুজো দিয়েই বছরের প্রথম দিন শুরু করতে সকাল থেকেই ভিড় জমান ভক্তরা। মন্দিরে ভোগ প্রসাদেরও আয়োজন করা হয়। কাকদ্বীপের শ্মশানকালী মন্দিরেও পুজো দেওয়ার জন্য সকাল থেকে ভিড় জমান হাজার হাজার মানুষ।
বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরের নতুন বছরে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। রাজ আমলে মধ্যযুগে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। মন্দিরকে ঘিরে অনেক লোককাহিনী আছে। দেবী সর্বমঙ্গলাকে বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী বলা হয়। কাটোয়ার সোনার মা ক্ষেপি মায়ের মন্দিরে নতুন হালখাতা, লক্ষ্মী-গণেশের নিয়ে এসে হালখাতার পুজো করান কাটোয়ার ব্যবসায়ীরা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালের বাজারবুড়ি শীতলা মাতার মন্দিরে সকাল থেকেই ব্যবসায়ীদের ভিড় ছিল। বেলা বাড়তেই সেই ভিড় আরও বেড়ে যায়। কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠ এবং জয়রামবাটি মাতৃ মন্দিরেও দূর-দূরান্ত থেকে ভিড় জমিয়েছিলেন ভক্তরা। নতুন জামা, নতুন শাড়ি পরে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে বীরভূমের তারাপীঠে মা তারার দর্শন সারেন ভক্তরা। বোলপুরে কোপাই নদীর তীরে অবস্থিত কঙ্কালীতলা মন্দিরেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।